কোপাইএর পাশে ঘুমায়ে আছে আমার ছোট গ্রাম
যেখানে কোপাই আর ময়ূরাক্ষীর হয়েছে সংগম।
ময়ূরাক্ষীর দুরন্ত স্রোতের সাথে কেটেছি
সাঁতার কত যৌবন কালে
হেসেছি খেলিছি কেঁদেছি কত গেয়েছি
গান কোপাইএর জলে।
সবুজ মাঠে নেমে আসে শ্রাবনের মেঘ
শ্রাবনের অতন্ত্র বর্ষণে ভরে যায় মাঠ ক্ষেত।
রোয়া ধান ডুবে যায় নিয়তির পরিহাসে
চাষীর মন দিশাহারা হয় আঁধারের শোকে।
মাঝরাতে চোখ খুলে চেয়ে দেখি ঘোলা জলের গর্জন
নদীর বাঁধে পাহারা দেয় গ্রামবাসী সব স্বজন।
অথৈ জলরাশি ডুবে আছে বিস্তীর্ণ প্রান্তর।
নদীর জলে ভেসে যায় বুভুক্ষু মানুষের আর্ত চীৎকার।
বাঁধ ভাঙ্গে জল ঢোকে বানভাসি গ্রামে আমার।
ভেঙ্গে যায় ভেসে যায় ছোট ছোট মাটির যত ঘর।
কেটেছে নিঃসঙ্গ দিন বুকে নিয়ে যত দুঃখ ভার।
ঘরে ঘরে ওদের চুলোয় জ্বলেনি আগুন
ঘরেতে ধুকেছে জল তলিয়ে গেছে চাল ডাল লঙ্কা লবণ।
থই থই রাস্তাঘাট,ক্ষুধার্ত মানুষের আর্তরব ওঠে চারিদিকে
জীবনের চেয়েও প্রিয় কিছু ছিল নদীর জলের বুকে।
এই কিছুদিন আগেও ছিল ভেজা আলপথে মানুষের পথচলা
ভেসে যায় প্লাবনে কুটিরের সারি আর খড়ের পালা।
বেদনায় ডুবে থাকে আমার বানভাসি গ্রাম।
এখানে মানবতার মৃত্যু যন্ত্রণা মুছে আসে না কোন ত্রান।