বহুবর্ষ ধরি রেখেছিনু আপনারে
যতন করি, তোমার লাগি পারাবারে
আমার যা কিছু সম্বল ভালোবাসা
এনেছিলাম তব চরন তলে আশা
ফিরায়ে দিয়েছো মোরে কাঙালিনী বেশে
চলে আমি যাবো আজ আপনার দেশে
তবু বন্ধু বলি কি দেখিছো – সেবিকার
পানে চেয়ে, চোখের জল সে বিধাতার
লিখন, ললাটে মোর দুর্ভাগ্যের কথা
লেখা আছে। চোখের জল সে ও তো মিথ্যা
তোমাদের কাছে। নারী হয়ে জন্মেছি
বলে অসহায় মোরা – অনেক লভেছি
পাপ, অনেক ভালোবাসা । তোমার লাগি
এ জীবনে যত পাপ যত ব্যথা মাগি
সবই ভাগ্যের পরিহাস বলে লব
স্কন্ধে তুলি – যত ভার পৃথিবীর তব
মরনের সাথে যুঝিব আমি একেলা
অধিক যতনে গেঁথেছিনু আমি মালা।
শুকায়ে যাবে একদিন চোখের জল
খেলিও না বন্ধু তুমি ভালোবাসার ছল।
ফুলের আঘাত দিও না বন্ধু মরমে
মরিবে মোর ভালোবাসা তোমার প্রেমে।
ভাঙ্গিয়া যাইবে আমার সুখের বাসা।
কাঁটার আঘাত দিও বন্ধু – দুঃখনিশা  
যা কিছু আসিবে জীবনে ত্যাগ তিতিক্ষা
উপলব্ধি করিব আমি তব আকাঙ্ক্ষা,
ভালোবাসা । কেন এসেছিলে তুমি মোর
জীবনে—নারী আমি কিবা আছে আমার
এ সংসারে, বনস্থল হতে উড়িয়া
আসে কোন রাজপাখী কত অসহয়া
সে, অধিক যতনে রাখিবে তারে কোলে
তুলি লয়ে। আপন হৃদয় দিয়ে বলে
দিও তারে। তৃষ্ণা মিটাইবার লাগি
আসি নি আমি এ ধরনী’পরে। জাগি
অনন্ত নিশিদিন বসি আপন ঘরে
মনের মুরতি এসেছে আজ মোর দ্বারে
যেতে নাহি দেব কোনমতে বারে বারে
লইব বরন করি তারে বাহু ডোরে
বাঁধিব তারে- বসাইব মোর অঞ্চলে
রাজটিকা এঁকে দেব জয়দৃপ্ত ভালে।
শুধাইব তারে ডাকি-ধনের কাঙাল
তুমি – অভাগিনীর প্রতি এত বিহ্বল
কেন এত ছলনা---
              ক্ষমা কর হে দেবী
বৈতরণীর মাঝে যেদিন অবশ্যাম্ভাবি
উঠেছিল যে দাবী – হংস বলাকার
মত বোকাছিলে তুমি। তবু আপনার
করে পার নি সে দিন নিতে।যুঝিবার
আশা আজ ব্যর্থ। ব্যর্থ তব অহংকার
ক্ষমা কর মোরে-
            কেন ব্যথা দাও প্রিয়
তব ভালোবাসার জ্বালা যাতনা সেও
সবই কি আমার। অনিবার আশা
জাগিয়াছে প্রানে; আঘাত লেগেছে, দিশা
হারা মোর প্রান। জাগিয়াছে ক্ষণিকের
তৃষা অধরে আমার। মধুচন্দ্রিমের
আশা – দুর্ভাগিনীর কপালে নেই লেখা
তোমার সাথে আজ কহিব দুটি কথা
নির্জন, নিরালা, মুক্ত আকাশ প্রাঙ্গন    
তলে- দুটি প্রান আজ চাই আলিঙ্গন
চাই মুক্ত বায়ু, চাই বাহিরিতে রাতে
পড়িয়াছে ডাক বসন্তের নবপ্রাতে।
নবীন ঊষার আলো হানিয়াছে যতি
প্রানে! থর থর কাঁপি ওষ্ঠ ক্ষীণঅতি  
হৃদয়ে জেগেছি তৃষ্ণা। বুকে লাভা সম
ফুজিয়ামার প্রবাহ –


                                  (ক্রমশঃ)