এইমাত্র চেয়ারে এসে যিনি বসলেন
আমি তাকে চিনি।
রোগজীর্ণ শরীর নিয়ে হাতলহীন নড়বড়ে
চেয়ারে উদ্ভ্রান্ত বিহ্বল।
বেঁচে থাকার তাগিদে সে উদয়াস্ত কাজ করে
এই ছোট্ট দোকানে।
মাটির ভাড়ে চা আর সঙ্গে দুটো নোনতা বিস্কুট
খেতে খেতে নিচু গলায় কাস্টমারের
সঙ্গে কথা বলে।
ফ্যানের হাওয়ায় চুলগুলো উড়ে এসে
মুখের উপর পড়ে।
আমি নিশ্চুপ চেয়ে চেয়ে দেখতাম—
শুকিয়ে যাওয়া ধুলি ম্লানতার কাছে
হামাগুড়ি দিয়ে সে প্রানপণ খুঁজত
তার ফেলে আসা দিন –
কোনটা বিবাহবার্ষিকী, কোনটা
পার্টিভাগের বিস্মৃতি। সে আমাকে বলত তার
হাহাকার জীবনের কান্নার কথা,
চাঁদের আলোয় ধুয়ে যাওয়া
শরীরের অব্যাক্ত বেদনা।
পরিত্রাণহীন নতজানু সে সময়ের কাছে।
তার প্রচলিত বোধের কাছে একদিন
জেগেছিল সন্ন্যাস ভাবনা।
গভীর ঝড়ের পরে বিধ্বস্ত শহরে
সে উদাসীন চেয়ে থাকে আকাশের দিকে।
কৃষ্ণচূড়ার বিকাল তার মনে রঙ
ধরাতে পারেনি কোনদিন।
রোদের অহমিকা হাতে দাঁড়িয়ে
তার শাখা প্রশাখায় ফোটে না ফুল ।
তাকে আমি অপর্ণা নামেই ডাকি।
তার হাজার বছরের অস্তিত্ব আর মৃত্যু
আমার আধারে অন্তর্লীন থাকে।
শব্দহীন আমি বাক্যহীন সময়ের বাঁকে
তার নিগুঢ় চিন্তাস্রোতে মিশে যেতে থাকি...