আমার ভাঙা পাঁজরের ভিতর যে নিঃস্পন্দ
সংগ্রাম চলছে। তুমি তার সারাংশের
যোগ্য হতে পার নি।
বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হতে হতে
তুমি হাঁটু মুড়ে বসে পড় পথে
তখন তুমি টের পাও সময়ের অসহ্য কটাক্ষ।
যেন এক একটা দিন, এক একটা বছরের মত।
তখন তোমার চোখ থেকে ঝরতে থাকে
ফোঁটায় ফোঁটায় স্বাতীনক্ষত্র জল।
আর বাদামী দীর্ঘশ্বাস।
তোমার ঠোঁটের ভাষা বুঝতে গিয়ে হোঁচট খাই আমি।
তবুও আমার জটিল অরণ্যে তুমিই একমাত্র বিটপী।
অরণ্যের মর্মরিত দিনরাত্রির মত
আমি চিনতে চেয়েছি তোমার প্রতিটি শব্দ।
তাজা ধাতব স্পষ্ট অক্ষর।
যা দিয়ে আমি তোমার সমারোহের কাছে
চিহ্নিত করি- তোমার কুশলী ভালোবাসার সংরাগ।


যে পাতা ঝরেছে প্রতি হেমন্তের শীতে
যে ধুলো উড়েছে প্রতিটি চৈতালী ঝড়ে
যে বৃষ্টি ঝরেছে প্রতি শ্রাবণধারায়
যে স্বপ্নেরা এসে সারারাত পুড়েছে বালিশে।
সেই ঘনান্ধকার স্বপ্নস্রোতে আমি ভেসেছি।
দিনবসানে হয়েছি ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত।
ভরা চাঁদের জাগর রাতে
তোমার কোমল হাত কি ছুঁয়েছিল
আমার রক্তিম অধর গভীর আশ্লেশায়।
তুমি সেই অগ্নিবিনাশিনী লক্ষভেদী
অরণ্যের ভেতর বিচ্ছুরিত হও
জ্বেলে দাও অনুকূল আগুনের লেলিহান শিখা
আলোকিত করো তোমার সমগ্র পশ্চাৎপট—
আমি প্রলুব্ধ হই তোমার প্রতি
তোমার আঁচলে জমিয়ে রাখা কুসুমরাঙা রোদ
ছড়িয়ে দিই তোমার গর্ভে।
তুমি গর্ভবতী হও।
তোমার গর্ভের ভিতর আমি খুঁজে পাই
আমার মৃত্যুলগ্ন।