সবসময় কথা বলতে ভালো লাগে না,
বিরক্ত করো না অঞ্জন।
সত্যিই তো চারটে দেওয়াল মানেই তো আর ঘর নয়।
আমারা ঘর বাঁধতে চেয়েছিলাম অথচ শেষমেশ হল সেই চারটে দেওয়াল।
কিছু সময় কিছু স্তব্ধতা হাজার একটা ডায়ালগ বাজির থেকে বেশি মূল্যবান।
আর তুমি যেদিন আমার স্তব্ধতার মানে বোঝনি,
আমি সেদিন থেকেই বুঝে গেছি আমার কথা তোমার কাছে শুধুই একটা অসংলগ্ন চিৎকার।
আমাদের কোনো অভাব নেই, কোনো অভিযোগ নেই।
অথচ আমাদের এই চার দেওয়াল ঘর হল না।
জীবনটা তো আর তিন ঘন্টার বায়োস্কোপ নয়,
যে গল্পের শেষে হুট করে ঘোষনা করে দিলাম "এরপর রাজাপুত্র রাজকন্যাকে নিয়ে আজীবন সুখে সংসার করতে থাকল।"
তাহলে সব রূপকথার গল্প কি নিছক মিথ্যে?
দায়িত্ব আর কর্তব্যের বাইরে আর কি ছিল যার অভাবে আমাদের এই চারটে দেওয়াল ঘর হল না?
ভালোবাসা?
ছিল না কি?
হয়তো। থাক, এ প্রসঙ্গ আজও অমিমাংশিত।
আমরা বরং নিজের মত করে সাজিয়ে নিই।
এই চারটে দেওয়াল তো আর ঘর হল না,
আমরা বরং যে যার এক একটা কোনা নিজের মত করে গুছিয়ে নিই।
মাঝে মাঝে এই দেওয়ালের অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস আমাকে আমার ব্যর্থতার অনুভূতি দিয়ে যায়।
এর ভীত আছে, ছাদ আছে, অনেক দামী রং করা আছে এতে।
সাজানো গোছানো যত রকমের বিলাসিতা আছে ওর।
তবু তো অসম্পূর্ণ, তবু তো ঘর হল না।
অঞ্জন, আমার মস্তিষ্কের চারিদিকে শীতলতা সবকিছু স্তব্ধ করে দিয়েছে।
কানের পর্দা ফাটিয়ে কোনো শব্দই আর মনের রাস্তা খুঁজে পায় না।
তুমি ঠিক বলেছিলে, এটা ঠিক ঘর ঘর দেখতে কিন্তু  ঘর নয়।
একটা ফাঁদ, একটা প্রলোভন। যেটা আমাদের আষ্টে-পৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে একে অপরের খুব কাছে,
অথচ মাঝখানে কয়েক আলোকবর্ষের দূরত্ব।
কথা বলো না অঞ্জন, কথা বলতে ভালো লাগে না।
পরাজয়টা নাহয় নিঃশব্দ মেনে নিলাম।
সত্যিই তো ঠিকই বলেছ চারটে দেওয়াল মানেই তো আর ঘর নয়।