শহর তুমি  দাঁড়িয়ে আছ বৃষ্টি ভিজে ,
তোমার পায়ের তলায় আস্তাবলের নোংরা জল -
আজ ভাল নেই , মন কি তোমার, দেখি
ছুঁড়ছে লাথি  দাঁড়িয়ে থাকা ঘোড়ার দল –

শহর তোমার হাতেটানা সেই রিক্সা ওয়ালার বৃদ্ধ শরীর ভিজল ভীষণ –
তার ছেঁড়া গেঞ্জি ও  কাঁধ -গামছাটুকুর নিংড়ানো জল ,
কখন শুকায় ,  কোন ঠিকানায় -শহর তুমি খোঁজ রাখ কি
তার শিরদাঁড়া খান  বিষাদ রঙের রামধনুতে বেঁকে ,
শহর তুমি দেখতে কি পাও ?  
তার ডাল ভাঙা চোখ পথেই গেছে ঝুঁকে –

শহর তুমি খোঁজ রেখেছ বৃষ্টি ভেজা তানপুরা টার ,
জ্বর আসা সেই ক্রিকেট ব্যাটের –
স্যাঁতস্যাঁতে সেই কারখানাটার ,
টিনের চালে ওড়না শুকায় যে মেয়েটা -
  
জানো শহর , পিঠের ব্যাগে স্বপ্ন ভরে,
যারা আনল বয়ে ভোরের বাসে,  
তারা ফিরবে আবার  -শেষের বাসে ,
শহর ফোন তুমি করেছ
কে জানে বাস ছাড়ল কিনা – তারা বাড়ি ফিরল কিনা -  
তোমার  লিস্টে আছে কি তারা ?
  


আচ্ছা ,শহর তোমার আকাশ ছোঁয়া বাড়ির ভেতর মানুষ থাকে,  বরষা ঢোকে ?  
সেই মানুষের মনের ভেতর বৃষ্টি আসে- জানলা খুলে ?
ওরা কি জানে  ,শহর তুমি  ভিজছ ভীষণ একলা রাতে ফিরছ বাড়ি ,
কেউ শোনেনি কান্না তোমার ,  
কেউ দেখনি কখন তোমার ছিঁড়ল জামা –
গাঁয়ের ওপর  আঁচড় কাটা  , কেউ রাখনি খবর তোমার –
তবুও দেখি সকাল বেলা ,
ছাপল দেখি সেই কথাতাই সব কাগজে ফলাও করে -


দেখি বৃষ্টি  তো আর থামছেই না -
তবুও  শহর তুমি দাঁড়িয়ে আছ  সবুজ মেখে হলুদ ফুলে -
তবুও তুমি দাঁড়িয়ে আছ পীচের ওপর জল আয়না ধরে ,  
তবুও তুমি খুব সেজেছ মেঘ ঝোলা ওই ঝুমকো দুলে –  
হাঁটছ দেখি লম্বা চুলে ,
কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি কনা চিটিয়ে গালে –
শহর তুমি প্রেমে করেছ ,
কাঁধ রেখেছ দাঁড়িয়ে থাকা বৃষ্টি ভেজা গলির মোড়ে ।