কিছু কিছু কাজ-
সেগুলো নাকি কেবল মেয়েদেরই হয় –
যেমন ধরো বাচ্চাকে বড় করে তলা,
রান্না বান্না করা ,বাসন মাজা, ঘর মোছা ,মাছ কাটা-
ফ্রিযে সবজি গোছানো, বালিশে কভার পরানো, মেয়ের স্কুলের খবর রাখা, জামার বোতাম সেলাই,
বাড়ির কে কি খাবে,কার কি লাগবে ইত্যাদি ইত্যাদি ।
মেনেই নিলাম এ কাজ গুলো খুব যত্নের সাথে সুন্দর করে মেয়েরা করতে পারে ।
কিন্তু জানবেন ,তাতে কাজগুলো মেয়েদের কাজ হয়ে জায় না ।
কাজগুলো বরং আপনার বাড়ির কাজ।
আপনার খাবার তৈরি করা, জামা ইস্রতি করা ,আপনার বিছানা পরিষ্কার রাখা ,আপনার বাবার সুগারের ওষুধ মনে রাখা ,
আপনার মায়ের বাতের বাথায় মালিশ দেওয়া ,গরম জল দেওয়া-
এ সমস্ত কাজ গুল অধিকাংশ ই দেখতে গেলে আপনার কাজ,
যা একজন স্ত্রী অনায়াসে করে দেয়-
জানেন শুধু আপনি না,অনেক পুরুষ মানুষ এমন বলে থাকেন, তার গৃহবধূ অথবা চাকুরিরতা বধূটিকে –
বলে ঘরে বউ এনেছি কিসের জন্য তবে-
এমন লাখো মেয়ে আছে যারা বাড়ির সমস্ত কাজ করে রাখলে তবেই অনুমতি পায় বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করার  -
নইলে সহজেই  আপনারা তাদের হাজারটা দোষ ধরবেন ,
স্বার্থপর বলবেন , সংসারে দিন দিন অশান্তি বানিয়ে দেবেন ।
আর শেষমেশ   চাকরীটা ছাড়িয়ে দেবেন , নয় সংসার ভেঙে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করবেন-
অথচ গিন্নির রোজগারের টাকাটার  উপর আপনাদের সকলের আধিকার ,
এমন অনেক বার শুনেছেন হয়তো ,
নিজের ছোট বোন বা ভাই ,  
বা চাকরি না করা দাদা দিদিদের আত্মীয়দের থেকে
এর জামা নাই, জুতা নাই,
ওর খাতা নাই , চশমা নাই,
তার ছাতা নাই , মোবাইল নাই।
আর আপনার আদরের ছোট ভাইটির  চাক রি নাই -
চাকরি ও তো কেনা জায় -
শুধু আপনি পারেননি কিনে দিতে সবকিচু সবাইকে

তাই এইটা নাই ,  ওটা নাই---
যতই আনুন –  যতোই কিনুন সারাক্ষণ নাই আর নাই-
আপনারও কিছু করবারও নাই-
কারন সবাই  আপনার মুখে মুখে বলে, তোর বউওতো রোজগার করে-
সেই নাই গুলোর সবকটা সময়ে সময়ে না মেটাতে পারলে-
তাদের রাগ গিয়ে পড়ে আপনার স্ত্রীয়ের উপর-
তখন আপনার কানে আসে আপনার স্ত্রীয়ের নামে কতরকম গুঞ্জন  –
এমন কথা নিজের স্ত্রীর সম্পর্কে নিজের কাছের লোকের শুনতে হবে ,কখনো ভাবেননি ,
নিজের লোকেরা তো মিথ্যে বলবে না-
কি লজ্জা কি লজ্জা কি অপমান-
আপনিও রাগ করে ওমনি পাঁচটা কথা শুনিয়ে দেন আপনার স্ত্রীকে ,ক খ নো হাতও উঠে মাথা ঠিক না থাকলে
সব শেষে সেই---প্রমান হয় বাড়ির বউটারি দোষ,
সংসার শান্তি রাখা বাড়ির বউয়ের কাজ কাজ-
সত্যি বলতে কি এই কাজটাও আপনার স্ত্রী অনায়াসে করে হাসি মুখে-
তাইতো এখনো বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়নি , এখনো বলেনি আমাকে নিয়ে অন্য বাসায় থাকো -
বরং অফিস থেকে ফেরার সময় কারুর খেলনা, কারুর জামা, কারুর  জুতো –
সব ফর্দ মিলিয়ে কে কি চেয়েছিল ,যা আপনি আনেনি কোন কারনে-
তখন দেখবেন বাড়িতে শান্তি না থাকুক অশান্তি্টা বেশ কম-
অথচ আপনার স্ত্রীকে , এমনও শুনতে হয় যে-
ওই তো বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে সকাল নটায়
ফিরবে সেই ছয়টা , সংসার আর দেখবে কি করে-
এরকম চোলতেই থাকে দিন দিন ,
আপনার স্ত্রী চোখের তলায় কালি আরও বাড়তে থাকে-


আপনি ,হ্যাঁ আপনাকেই বলছি , আপনিই তো হলেন তার সবচেয়ে কাছে থাকা একটা মানুষ , পুরুষ মানুষ –
আপনিই পারেন আপনার বাড়ির বউ নামের মেয়েটার প্রতি একটু বন্ধুতের হাত বাড়িয়ে দিতে –
বেশি কিছু তো না –
একটু হাতের কাজে হাত লাগান-
একটু জলের বোতলে গুলোতে জল ভরে রাখুন-
এক গ্লাস জল দাও তো – না বলে
জলটা নিজে নিয়ে খান-
বাচ্চাটাকে খাইয়ে দিন ,একটু স্কুলের পড়াটা করিয়ে দিন ,
স্কুলের  ব্যাগটা গুছিয়ে দিন ।
রান্নাঘরে কড়ার ভাজতে দেওয়া মাছটা উল্টে দিন ।
নয়তো কাচা জামাকাপড় গুলো মেলতে দিন –
আপনার বয়স্ক বাবা মায়ের বিছানাটা গুছিয়ে রাখুন
রান্নার আগে একটু সব্জি কেটে দিন ,
প্রথম প্রথম হয়তো আপনার লজ্জা করবে-
এই ভেবে আপনি বউএর কাজগুলো করেদিছেন –
অথবা আপনার স্ত্রী যত সুন্দর ভাবে করে আপনি তার সিকি ভাগ ও পারছেন না,
কারন আপনি মনে করেন এ কাজ গুলো ছেলেদের নয় -  
সত্যি কথা বলতে কাজের গায়ে লেখা থাকে না –
কোনটা ছেলের আর কোনটা মেয়ের-
আসলে এ কাজ গুলো আপনাকে কখনো করতে হয়নি-
বা কেউ কখনো এই কাজ গুলো আপনাকে করতে বলেনি –
আপনার মা, কাকিমা জেঠিমা সব করেনিয়েছেন-
কিন্তু তাই বলে বাড়ির বউটিকে কথায় কথায় এগুলো মেয়েদের  কাজ বলা বন্ধ করুণ ।
আর আপনি চেষ্টা করতে থাকুন, আপনিও পারবেন ,
কিন্তু দয়া করে হাতটা গুটিয়ে নেবেন না।
কারন আপনার স্ত্রীর কাছের বন্ধু হয়ে সুযোগ টা এভাবে নষ্ট করবেন না –
আপনাদের সম্পর্কটা আর এখনকার আর পাঁচটা সম্পর্কের মতো ভেঙে যাচ্ছে না –কোন কারন অকারনেই -  
জানবেন আপনি কিন্তু প্রথম না ,
এরকম অনেক মানুষ আছেন যারা তার  বউটির শুধু স্বামী নন  প্রানের বন্ধু , আপন জন।
এতে কেউ যদি আপনার কোন সম্মান হানি করে -
বলে  আপনি বউয়ের পেছনে ঘোরেন ,
তবে বলুক -
তবে জানবেন সে কিন্তু তার স্ত্রীর কেবল মাত্র বিয়ে করা বর-
খুব একটা আপন কেউ নয়,
যে কোন মুহূর্তে সে হারাতে পারে সব ঘর পরিবার প্রিয়জন ও স্ত্রী –
এটাই চলছে এখন –
এখন সম্পর্ক রা ফউরথ পয়েন্ট সেভেন জেনারেশন।