ভালোবাসাকে দেখেছিলাম ,
এক মধ্যবয়সী নারীর নাকছাবিটার ফুলে ---
ভিড় ঠাসা বাসে , আনত নয়নে লাজুক হেসে ,
বলছিল যেন সে কাকে –
নাকের নাকছাবিটা বর দিয়েছে কিনে-
এক অদ্ভুত হাসি লেগে ছিল তার ঠোঁটে ,
অধিক আদুরে দুটি ঠোঁটের কথা বলা ও না বলা তার ,বলছিল  
যেন সে ভাসছে সাগর সুখে -
এক স্থির আলো লেগে ছিল তার ধীর অতি ধীর চোখের তারার বিচরণে –
তার ময়লা শাড়ীটার কোকড়ানো আঁচলে গিটমারা কুচো পয়সা কটাও
দুলছিল যেন সুখ আন্দোলনে –
সাগর মেলায় যাচ্ছিল সে , সেদিন ,  
এই একটাই সাধ  নাকি বাকি ছিল তার জীবনে –
ভিড়ের বাসে , যেন তার কোন কষ্টই নেই ,
অসম্ভব গরমে ঘাম ভেজা লোক জন , ধস্তা দস্তি ওঠা নামা ,
বিরক্ত মুখে মানুষের কথা কাটা কাটি , ঝগড়া ও ঝাটি –
তায় তার কোন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই –
সে চলেছিল সাগর মেলায় পুন্য অর্জনে ,
নাক ছাবিটার হঠটাত হঠাত ঠিকরে পড়া আলো,
ঠিকরে এসে লাগছিল আমার চোখে, বার বার ।
লাগছিল চোখে কোন অজানা অদেখা সুখের আঘাতও যেন  –


বাড়ি ফিরেই প্রথম কথা আমার ,
আমি যেতে চাই সাগর মেলায় ,
যাচ্ছে কত জন –দেখেছি বাসের ভীড়ে।  
আর দিয়ে তো আমায় একটা নাকছাবি কিনে –
অবাক চোখে তাকিয়ে , সে বলল আমায় ,
সাগর মেলায় যেতেই পার ,কিন্তু নাকছাবি ?
কার জন্য ,  
চুপ করে থাকি -
না নাকছাবি কখনো পরিনি আমি  –
চিরকাল বড্ড অপছন্দের ছিল ওটা –
আজ বাসের ভীড়ে বদলেছে গল্পটা -
মনের ভিতর , চুপি চুপি
আরো একবার দেখি , ভালোবাসাকে দেখি ,  
সেই মধ্যবয়সী নারীর নাকছাবি টার ফুলে –
আমিও যদি  ,ওই ওরকম ভাবেই যাই সাগর মেলায় ।
যেমন তেমন করে পরা এলোমেলো শাড়ী ,
উসকো খুসকো বেণী চুল –
আঁচলে বাঁধা থাকবে কটা টাকা ,
,ভীড় ঠাসা বাসে ঘাম গন্ধে মিশে কোনরকম দাড়িয়ে থাকব ঠিক ওই মধ্যবয়সী বধূ টির মত ,
ওই সুন্দর হাসিটা  আসে যদি আমারো দুঠোটে।
এক টুকরো সোনার বিন্দু  নাকছাবিটার ঠিকরে পড়া আলোয়
ঝরবে এক সাগর ভালোবাসা ,
যেমন দেখেছি আমি তাকে ,
এক মধ্যবয়সী নারীর নাকছাবিটার ফুলে।