শীতের সকাল,
কুয়াশায় আবছা চারিদিক।
মাটির বাড়ির উঠোনেতে এক চিলতে রোদ্দুর।
কাঁপা গলায় কচিকাঁচার পড়ারধুম।
চাদরমুড়ি গায়,
বইয়ের পাতা উল্টে গেছে শীতের হাওয়ায়,
এএক মুশকিল।
দিদিমনি, ওই ষোলো-সতেরোর,
রাগিরাগি তার চোখ ।
তবু রাসভারি তার কথা-
এই অংকটা কর,ওই উত্তরটা লেখ,
‘ছাত্রবান্ধুটা’ খোল একবার-
এই ছিল তার কাজ।
আমার জানালার ওপারেই ছিল
তাদের সে কলরব।
অবাকচোখে- সে সব লাগছিল বেশ ভালো।
চাষীমজুরের কন্যা সে যে
তার আছে এক দাদা ।
দুজনের মিলে মাসের শেষে
ঐ পড়ানোর টাকা,
দিন যে চলে না ।
চাষ-বাসের টাকা কোথা,
জমিওতো ওই কয়েক কাঠা
এদিন-কালে,
উপায়ের আর নেই তো কোন পথ্।
মুদি দোকান দার,
দিছে না আর ধার।
করছে শুধুই  অপমান ।
তবে কি করে চলবে এ স্ংসার ।
রাত্রিতে কাল ,এই নিয়ে ঘরে
হয়েছে বচসা।
এই সকালের শান্তির মাঝে
থেকে গেছে তার রেষ।
দিনমজুরের অভাব বড় ।
তাই নিয়ে সে কাঁচাকথায়,
প্রানখুলেএই মিঠেরোদে,
উঠোনেরই কোনায় বসে,
করছে গভীর অনুতাপ।
শীতের হাওয়া উঠল ভরে
তার সে কটু কথায়-
সে কথায় -
সেই ষোড়শীর
ভরল যে চোখ কখন জলে,
কি ভাবনায় ভাসল সে মেয়ে
আপন মনেমনে।
স্লেটের লেখা মুছল জলে,
আড়াল করে দু-চোখ।
ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাগুলো
পড়ে গেলএকমনে ।
বহে গেল বেলা
তবু কান্নার জল
মুছল না কেউ এসে।