মিলি ডিভোর্স চেয়েছিল ,
বিয়ের দশ বছর পর একমাত্র মেয়ে রিমলি্কে
নিয়ে সিঙ্গেল মাদার সে এখন –
অথচ এরকম কথাই ছিল না ।
বাবার একমাত্র  মেয়ে ভীষণ আদুরে মেয়ে মিলি –
না কোন অবাধ্য বিগড়ে যাওয়া মেয়ের মত ,
যাকে তাকে প্রেমের বিয়ে সে করেনি –
কত পাত্র দেখা দেখি ,কত বিঙ্গাপন কত আয়োজন ,
তারপর বাবার মায়ের পছন্দ মত পাত্রকে বিয়ে –
না না যা ভাবছি আমারা তা একদমই নয় ,
এক্সট্রা ম্যারিটাল আফেয়ার নয় ,
সশুর বাড়ীতে পনের দাবি নয় ,
না তার বর কোন মাতাল বদমাশ চরিত্র হীন নয় ।
না কোন পারিবারিক হিংসার শিকার ও সে নয় -
তাদের দুজনের সেররকম কোন সমস্যাই নেই –
শুধু সমস্যাটা ছিল দুজনের চাকরি –
দুজন দুই প্রান্তে চাকরি –  
কেউ কারোর ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে পারেনি কখনো –
সদ্য জন্মানো ছোট্ট মেয়েটাকে রিমি যখন একেবারে একা –
বাবাও মারা গেল হঠাত –
না সেদিন ও আসতে পারেনি তার বিয়ে করা বর ,
এসেছিল দুদিন পর ,
মিলি  শুন্য দৃষ্টি তাকিয়ে ছিল ফ্যাকাসে ম্লান ,
যেন কোন দুঃখ ছোঁয় না তাকে , যেন সুখ ছোঁয় না তাকে আর -  
মিলি সব বোঝে , মিলিকে সব বুঝতে হয়  
বরের প্রাইভেট চাকরি , তার ওপর চাকরির বাজার এত খারাপ,
তাই চাকরিটা টিকিয়ে রাখাটাও একটা চ্যালেঞ্জ –  
শিক্ষিত চাকরি রিমির বিশাল কিছু অর্থের চাহিদা নাই ,
সবই বোঝে –
বুঝলেই বা কি –
মনের মধ্যে জাহাজ ডুবছে জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে ধাক্কায় ধাক্কায় –
তার সরকারি প্রাইমারীর  চাকরিটা  অনেক কষ্টে পাওয়া –
না বরও কখনো তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেনি –
বিশাল কিছু অর্থের চাহিদা তাদের নাই , কিন্তু তারা অর্থের প্রয়োজন টা দুজনেই বেশ বোঝে –
না কোন অভিমান নয় , না কোন ইগো নয় –
শুধুই  দূরত্ব  যা উপড়ে ফেলেছিল সমস্ত আশা ,ভরসা ও নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস কেও -
একা হাতে সমস্ত কিছু করতে করতে ক্লান্ত ,বিষণ্ণ ,ভয়ার্ত বিষাদ গ্রস্ত ,
মিলির মেন্টাল ডিপ্রেশন ,
ছয় মাস কাউন্সিলিং  , তবুও বরের ছুটি নেই –
মিলিরও ছুটে আসতে পারেনি বররের এক্সিডেন্টের সময় –
না তাদের তেমন কেউ নেই ,
পরিবার পরিজন , যাকে পাশে ডাকা যায় -
সবারই তো এখন নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে ইলেকট্রন সংসার –
স্মাট ফোনের স্ক্রিনে মিলির ছবি ,
রিমলির ছবি –
অসহায় মুখে বসে থাকে ছেলেটা –
কিছুতেই সে বোঝাতে পারেনি মিলিকে , সে পাশে আছে মিলির-
মেয়ের পছন্দের খেলনা , কিছু ড্রেস, রিমির প্রিয় হলুদ রঙের
কুর্তি অনলাইনে অর্দার দিয়ে মিলির নতুন অ্যাড্রেসে পাঠিয়ে দেয় –
যদিও সম্পর্কটা নেই আজ আর ।
মিলি এখন সিঙ্গেল মাদার ।