এয়ার-টাইট প্যাকেটে মোড়া
কালো দানা সবুজ দানার চা দেখেছি।
দেখিনি কোন চা দাসের রৌদ্রদগ্ধ কালো শরীর।।


উষ্ণ লিকারে তেজদ্দিপ্ত ধোঁয়া রাশি দেখেছি
দেখিনি দিন শেষে চা দাসের বিমর্ষ চেহারা।
চায়ের কাপে অধর রাখতেই
নিস্তেজ দেহ নিমেষেই সতেজ।
কখনও ভাবিনি, আমায় সতেজ রাখতে
কত সজীব দেহ আজ পরিশ্রান্ত!


কখনও কি ভেবেছি,
কফোটা রক্ত ও ঘামে আজকের এই করা লিকার?
ভেবে কি লাভ? বুঝি সবই; তবুও নির্বিকার।
লিকারের সাথে চিনি, দুধ আরও কত কি।
ওরাও চা পান করে; উপাদান যেখানে
লবণ, পানি, সদ্য তোলা চায়ের পাতা।
পরিশোধিত চা পান করতে নয়,
পান করানোর জন্যই যেন ধরায় আসা।।


যুগে যুগে শাসকদের পালা বদল হয়েছে অনেকবার।
বদল হইনি চা দাসদের ভাগ্য।
শ্রমিক না বলে, দাস বলছি এই জন্য যে,
শ্রমিকদের পারিশ্রমিক হয়;
কিন্তু ওরা বিনিময় যা পায়, তা দাসত্ব ছাড়া,
আর কি বা বলতে পারি!


কখনও কি ভেবেছি?
অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ টাকা দাসত্বের পুরষ্কার,
সপ্তাহান্তে দু’চার কেজি লাল আটা,
রোজ ম্যানেজারের খিস্তি,
দেহে আঘাতের চিহ্ন,
কয়েদিদের মত নির্ঘুম রাত কাটানো,
আর চিকিৎসা! সে তো এ জন্মের নয়।
তবে একটা জিনিস পায় ওরা,
নেশায় বুদ হয়ে থাকতে যেটুকু মদ দরকার
পায় তার চেয়ে বেশি।
মদের অধিকার আদায়েই মৌলিক অধিকার গুলো বিলিন।
এই মদই যেন ওদের দাসত্তের কারন।।


ব্রিটিশরা গেল, বিহারিরা এলো,
বিহারিরাও চলে গেল; শুরু হল বাঙালির শাসন।
শাসক বদলেছে, মালিক বদলেছে,
বদলেছে বাগান ব্যবস্থাপক,
বদলায়নি কেবল শাসনের ধরন,
দাস প্রথা ও দাসত্তের চিহ্ন।।


16-10-2014; রাত ১১:৪০