জল পড়ে-পাতা নড়ে, ছিল শৈশবের প্রথম সহজ পাঠ,
সরল দুষ্টুমিতে প্লাবিত আশৈশব, ছিল না ক্লান্তির বাঁধ।
নতুন আশা, নতুন নতুন সব ঐশ্বরিক কাণ্ডকারখানা,
কলম্বাস ছিল মন তখন,
শিরায় শিরায় ছিল নতুন যত আবিষ্কারের উত্তেজনা।


জল পড়েই পাতা নড়ে, কৈশোরেরও প্রথম সহজ পাঠ,
যা ছিল জীব ও জড়ের অস্তিত্বেরই এক চাঁদের হাট।
নতুন পড়া, নতুন খেলা, সাপ লুডোর সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা,      
অরণ্যদেব ছিল মন তখন,
ইচ্ছা শুধু, ছাতকুড়ো পড়া সমাজের মুখে মুষ্টির ছাপ রাখা।


জল পড়লে পাতাও নড়ে, সেতো ভরা যৌবনেরও পাঠ,
প্রকৃতি-প্রেমের আশ্চর্য সঙ্গম, দুটি মন, একসাথে চারি হাত।
নতুন সাথী, নতুন পথ, কড়াঘাত যতো ভালোবাসার রুদ্ধ দ্বারে,
বাউণ্ডুলে প্রেমিক মন তখন,
লিপ্ত থাকে সব সুপ্ত ভালোবাসাকে আপন করার কৌশলে।


জল যদি পড়ে, পাতা তবে নড়ে,-এবারে  পালা বার্ধক্যের,
মায়ার জালে জড়িয়ে গেছেন প্রাণেরও প্রিয় কবি আমাদের।
বুঝতে হলে খুঁজে দেখো, সেই অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের;
বৃদ্ধাশ্রমে বন্দী মন থাকে যখন,
ভালোবাসারই ক্ষীন আশায়, অপেক্ষারত নিজ সন্তানেদের।


জল পড়ে, পাতা নড়ে, নয় এ শুধু কোনও কবিতার ছন্দ,
এ সুরে বাঁধা পড়ে আছে এই জীবনেরই সব ভালো-মন্দ।
জীবন চক্রব্যূহে, বার বার চেয়েছি ধরতে মরীচীকার হাত,
ব্যোমকেশ হল মন এখন,
বুঝলাম এ যে গোটা সমাজ জীবন চক্রের এক জটিল পাঠ।।