চাচা!চা হবে?
কে?রোকন না?
জি চাচা।ভাল আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ,ভালা
একি বাজান!
সোনার দেহ পুইড়া করছেন কালা।
কই আছিলা,বছর তিনেক?
ফেইলা বাড়ি ঘর
ছিলাম চাচা,অনেক দূরে
দূরের শহর।
তা বাজান একটা কথা!
বলতে পারি!
যদি মনে না নেন ব্যাথা?
বলেন চাচা কি জানতে চান
বলেন খুলে মন।
সবই বলবো মন খুলিয়া
যা বলা প্রয়োজন।
বাজান কি তারে ভালবাসতেন?
নাকি সবই গল্প?
লোকের মুখে শুনছি অনেক
বুঝছি অল্প স্বল্প।
বাসতাম চাচা অনেক বাসতাম
এখনও হয়তো বাসি....
এখনও চাচা আগের কথা
মনে করে হাসি।


এই নেন বাজান
আদা চা
মনে আছে তাহলে
বাহ্ চাচা বাহ্।
আপনার কথা ভুলুম কেমনে?
আজ থাইকা কি চিনি?
আপনার বাপের কাছে আমি
সারা জীবন ঋনী
সেইবার ক্ষরায় আপনার বাপে
যদি না দিত ধান।
গলায় দঁড়ি দিতাম গো বাজান
রাখতে কূলের মান।
বাপের মতন লম্বাচওড়া
বাপের লাহান মুখ
দোয়া করি বাপজান আপনার
জান্নাতবাসী হোক।
প্রেমের কষ্ট বড় কষ্ট
এইডা আমি মানি
আমিও করছিলাম পিরিত
যন্তর মন্তর জানি।


আজগর মোল্লার বড় কন্যা
গাঙ্গের ঐ পার বাসা
তারে নিয়া ঘর বাঁধিমু
মনে ছিলো আশা।
গঞ্জে গেলে কাজল কিনতাম
স্বপ্ন বুনতাম জালে
কুমার বাড়ি দেখা করতাম
প্রতিদিন বিকালে।
আঁচলে কইরা আনতো কন্যা
বিন্নি ধানের খৈ
এইবার শীতে বাজানরে যেন
বিয়ার কথা কই।
কইতাম তারে বিয়ার পরে
কইরা রাখুম রানী
খিল-খিলাইয়া হাসতো কন্যা
যেন গাঙ্গের পানি।
সবে শীতে কন্যার বাড়ি
বিয়ার প্রস্তাব দিমু
গঞ্জে গিয়া পাগল হইলাম
কি থুইতে কি নিমু।
লাল রঙ্গের শাড়ি কিনলাম
কিনলাম চুড়ি আয়না।
পান শুপারি আতর কিনলাম
কিনলাম সোনার গয়না।
বিকাল বেলা রওনা দিলাম
ময়মুরুব্বি নিয়া
পাকা কথা হইয়া গেলে
আজই করমু বিয়া।
গিয়া দেখি কন্যার বাড়ি
ভরা মানুষজনে
কন্যা আমার মইরা রইছে
সাপেরও দংশনে।
চাইয়া দেখি সোনার দেহ
বিষে হইছে নীলা
কি খেলা দেখাইলা বিধি
সবই কাইরা নিলা।
চিৎকার করে কানতাম বাজান
কানতাম প্রতি শীতে
আজও আমি কান্দি বাজান
পুরি পিরিতে।
প্রেম পিরিতি সবাই করে
মুখে কেউ কয়না
কেউ বাজান আমার মতন
কপালে সুখ সয়না।
শাড়ি খানা আজও আছে
আছে কিছু স্মৃতি
কষ্টের কথা বুঝে কয় জন?
করিলে বিবৃতি।
কেউ দেখে নাই,কেউ বুঝে নাই
আমার মনের ক্ষত
ত্রিশ বছর পরেও তাও
মাথা করি নাই নত।
একি বাজান! কানতেন কেন?
কষ্ট পাইছেন আবার?
দোকান এখন বন্ধ করমু
সময় হয়ছে যাবার।
সময় পাইলে আইসেন আবার
আমার ভাঙ্গা টংয়ে
কষ্ট থাকলে মিশ্বা যাইবো
আদা চায়ের রংয়ে।