সেদিন আমি উঠতে যাব বাসে
ধাক্কা লেগে বলতে গিয়ে সরি
সামনে দেখি মোটা গ্লাসের ভিতর
এ যে আমার হারিয়ে যাওয়া পরী।


একি পরী! কেমন আছো?
আজীব ভাগ্য রেখা!
কে জানতো এমন ভীড়ে,
আবার হবে দেখা!
আমি কিন্তু ভালই আছি
সরকারি জব করি,
তোমার দেয়া শেষ চিঠিটা
মাঝে মাঝেই পড়ি।
তুমি হয়তো বদলে গেছো,
আমায় গেছো ভুলে,
বয়সতো আর কম হলো না,
পাক ধরেছে চুলে।
রোজ দুপুরে কলেজ শেষে,
তোমার পিছু নিতাম।
মাঝে মাঝে রেণুর কাছে
খোলা চিঠি দিতাম।
পড়ে চিঠি হাসতে তুমি
বলতে আমায় বোকা।
বয়স তখন কুঁড়ি ছিলো,
তাও বলতে খোকা।
বিকেল হলে ছাদে যেতে
হাঁটতে আপন মনে,
আমি কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকতাম,
বাবুদের উঠনে।
সন্ধ্যা হলে,পড়ার ছলে
খাতা নিয়ে সাথে।
তোমার বাড়ি চলে যেতাম
বইয়ের অজুহাতে।
কাকি মাকে সালাম দিয়ে
তোমার ঘরে যেতাম।
মাঝে মাঝে পিঠে দিতেন,
ভয়ে ভয়ে খেতাম।
দেখতে দেখতে কেঁটে গেল
কলেজ জীবন সবার।
বাবুর সাথে বিয়ে হলো,
পাশের বাড়ির জবার।
আমারও তখন একই চিন্তা
চাকরি একটা নিয়ে,
বছর শেষে বোনাস পেয়ে
করে ফেলবো বিয়ে।
স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এলাম
বছর খানেক পরে,
চাকরি পেতে দেরি হলো,
আজীব এ শহরে।
মিষ্টি হাতে গ্রামে এলুম
স্বপ্ন নিয়ে চোখে
বিয়ে তোমার হয়ে গেছে
শুনি লোকের মুখে।
দৌঁড়ে গেলাম রেণুর কাছে
গেলাম তোমার বাড়ি,
তুমি তখন অনেক দূরে
পড়ে রঙ্গিন শাড়ি।
তার পর আর গ্রামে যাইনি,
চাইনি ফিরে পিছু,
কষ্ট মনে অনেক আছে,
এখনো আছে কিছু।
একি পরী!তোমার পাশে
এই পরীটা কে?
ভুল যদি না করে থাকি,
এটা তোমার মেয়ে।
তোমার মতই চলন,বলন
টানা টানা চোখ,
দোয়া করি রূপে গুণে,
মায়ের মতন হোক।
যদি পারিস মনে রাখিস।
আমি তোর কাকা।
আসি গো মা,বেঁচে থাকলে,
আবার হবে দেখা।