উৎসর্গ : কবি সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়


সবুজ-শ্যামল
বঙ্গদেশ মোর মাতা,
          ছায়া মায়ায়
          অঙ্গে জড়ানো লতাপাতা।
ফুলের মালা গলে
জবা চামেলী বেলী,
          বুকে রাঙা প্রজাপতি
          উড়ে ডানা মেলি।


আষাঢ়ে সুখে
বাদল বাজায় মাদল,
          চঞ্চল শিশুরা
          নাচে-খেলে বেঁধে দল।
পাখিদের
কিচিরমিচির কোলাহল,
          বৃষ্টির রিনিঝিনি নৃত্য
          দু'পায়ে মল।


বর্ষায় নদী টলমল
উতলা জল,
          মাছেরা সব
          আনন্দে হাসে খলখল।
খাল-বিল-ঝিল থৈ থৈ
ভরা জল রাশি,
          হাঁসগুলো করে
          প্যাঁক প্যাঁক হাসাহাসি।


শরৎতের রাতে
শিউলি ফুল ফুটে,
          শামুক ঝিনুকেরা
          খেলে নদীর তটে।
জননী প্রভাতী স্নিগ্ধ প্রভা
গায় মাখে,
          কাশবন শনশন
          যেন ধ্বনি শাঁকে।


গাঙচিল মাছরাঙা
পানকৌড়ি উড়ে,
          রাখালেরা গরু ছেড়ে
          গান গায় সুরে।
কৃষক ক্ষেতে
রোপন করে নানা শস্য,
          কৃষাণীর ঠোঁটে লাগে হাসি
          মনে হর্ষ।


উড়ে মেঘমালা
পরে নয়া শুভ্র শাড়ি,
          গায়ক গায়
          ভাওয়াইয়া জারি-সারি।
চারদিকে সুখময়
নানা পুষ্প গন্ধে,
          মৌমাছি নাচানাচি
          আনন্দে ছন্দে ছন্দে।


হেলেদুলে চলে
কত রূপবতী নদী,
          নদীর চলা
          হয় না শেষ আজবধি।
হয়েছে এপার-ওপার
সেতুবন্ধন,
          সুখে নদী হাসে
          দুঃখে করে ক্রন্দন!


বঙ্গ বধূ মুখে মধু
জানে কতো জাদু,
          তার প্রেমে মশগুল
          দুলদুল দাদু।
বংশী বাদক বাজায়
মোহন বাঁশি,
          হৃদয়ে বাঁশির সুর-ঊর্মি  
          উঠে নাচি।


মাঠে মাঠে ছেলে মেয়ে
করে নানা খেলা,
          পার্বণে পার্বণে হয়
          শান্তি ঐক্য মেলা।
দেশ প্রেমে বঙ্গ সন্তান
থাকে অভিন্ন,
          ধন্য মাগো বেঁচে আছি
          তোমারই জন্য।


আমরা এক
শ্রমিক চাষী জেলে কুলি,
          বঙ্গ মাতাকে যাই না
          কখনই ভুলি।
আমরাই রাখি আমাদের মা'র মান
বঙ্গ মাতার জন্য দিয়েই যাব প্রাণ।