একুশ, সে-তো মাতৃ ভাষার দাবিতে রাজ পথের মিছিল
তপ্ত বুলেট আর রক্তে ভেজা লাশ
একুশ বলতে বায়ান্নর শহীদের চেতনা
একুশ হল- বিশ্ব মাতৃভাষা ।


ঔপনিবেশিক শাসন, চলছে ভারত জুড়ে আন্দোলন
কৌশলে ধর্মের বীজ বুনে বাঙালির মন জয়
তারপর ক্ষমতার অংশীদারিত্ব নিয়ে
নানা ছলনা, চাতুরী, লাল গালিচা ।
বাঙালিরা প্রশংসায় কাবু, তা বুঝতে
বাকি ছিলনা পশ্চিমা নেতাদের ।
তাই সুযোগ বুঝে, বন্ধু সেজে, কি চমৎকার
বাজিমাত ! পাকিস্তান জিন্দাবাদ ।


জন্ম হলো পাকিস্তান, সূত্র ‘দ্বি-জাতি তত্ত্ব’
পুরো ইসলামী বিশ্বেই ছিলনা যার অস্তিত্ব ।
পাক-স্তান,  যেন পবিত্র- স্থান; পেয়ে মহা খুশি
মৌলবী, মুসলিম লীগ, আর জামায়াতের চ্যালারা
পরে বুঝেছিল নেতারা, কি হলো !
মগজ ধোলাই হয়েছিল । হচ্ছে, হবে
পাকিস্তানী তেলেসমাতি অন্ধ ধার্মিকের
আদতে এ সব ছিল পাক ধূর্ত নেতাদের চালাকি ।


এবার রাষ্ট্র ভাষা উর্দু বহালে ধার্মিক বয়ান-
‘উর্দু আরবির মত’।  জঘন্য মিথ্যা এসব
বানানো কথায় দালাল-মোল্লা লোক ভূলাতো,
আবার কোরআন-সুন্নাহর ধার ধারে না, তিনি হলেন
মুসলিম নেতা । যিনি আপন জিম্মাদারি নিয়ে
বাংলা- ‘হিন্দু ভাষা’ মিথ্যা ধোয়া তুলে
হঠাৎ ঘোষণা, ‘উর্দু এবং উর্দুই হবে’,
পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা ।


তার পরের ইতিহাস সকলের জানা
প্রতিবাদী এক ঝাঁক তরুণের সীমাহীন সাহসের হুংকার
বৃহস্পতিবার, পিচঢালা রক্তে  অবশেষে একুশ রক্ষা
নয়তো একুশ হারিয়ে যেত অকালে
শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি
ভাষার জন্য মানুষের আত্মাহুতি, বিশ্বাস হয়নি
শেষ-মেষ, মায়ের ভাষা-বাংলাতেই চলবে
কথা বলা, পড়া আবার কবিতা লেখা ।
একুশে কবিতা তাই রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত
শফিউর, অলিউল্যা, আওয়াল ও সহযোদ্ধাদের নিয়ে ।


একুশ, শিখিয়েছে মোদের মাথা নত না করে
লড়াই-সংগ্রাম, সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে
একুশের পথ ধরে পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা
তাই, একুশ হল বাঙালির আসল প্রেরণা ।
ভাষার জন্য শহীদদের এই আত্মত্যাগ
চির স্মরণীয় হয়ে রবে বিশ্বে, মানুষের কাছ ।
একুশের কবিতাও  চলবে, যতদিন পৃথিবী আছে
বিশ্ব কবিরাও লিখবে, অমর একুশে কবিতা ।


রত্নগর্ভা বাঙালী মায়ের সৌভাগ্যবান ছেলে গুলি
যারা সদা হয় বরণীয় শ্রদ্ধা আর সম্মানে
কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাস আরো কত কিসে
একুশে কবিতা, তাদের স্মরণে একটি  
‘একুশ’  রবে জেগে বাংলা-ভাষায়, বাঙালী-জাতিতে
বাংলা-দেশের প্রাণ হয়ে,  শক্তি যোগাতে  ।।