মা-যে আমার অতি প্রিয়, ত্রিভুবনে সে অদ্বিতীয়
সকল ধর্মের-বর্ণের কাছে, মা-ই প্রথম শ্রদ্ধেয় ।
গর্ভকালীন কত কষ্ট, মা ছাড়া কেউ জানেনা
শত কষ্টে আগলে রেখে, মাস কে মাস পাহারা ।
জন্মের দিনে মা আমার প্রাণের মায়া ত্যাগ করে
পৃথিবীতে আসবে মানিক মায়ের কোল আলো করে ।
এই আশাতে সকল মা, পাগল পারা হয়ে
নিজের জীবন বিপন্নে, সন্তান যেন সুস্থ থাকে ।


জন্মের পর আদর মাখা হাতের পরশ গায়
বুলিয়ে মলিন বদন খানি, নিয়ে আপন আলয় ।
সোনামণি, যাদুমণি এমনি কত নামের আদর
কত অপেক্ষা জেগে জেগে, ঘুমাবে কখন সোনামণি মোর ।  
শরীরের যত নোংরা পরিষ্কারে, বিরক্ত হয়নি এতটুকু
এমন নিখাদ দরদী বন্ধু, মিলবে না কোথাও কভু ।
জন্মের আগে গর্ভে রেখে, ভূমিষ্ঠের পর সম্মুখে
কত যে মাস না ঘুমিয়ে, দিন কেটেছে না খেয়ে ।
কাঁদতে দিত না মা-যে আমার, হাসিতে সারাক্ষণ
কোলে-কাঁকে, পিঠে নিয়ে আগলে যতক্ষণ ।
একটু খানি আড়াল হলে, অমনি ছুটে এসে
কোথায় গেল সোনা-মানিক, জড়িয়ে নিত বুকে ।
ধুলাবালি লাগবে গায়ে, পরায়ে দিত যত কাপড়
মায়ের সাথে বাবাও মিলে, করেছে সমান আদর ।


মায়ের মুখেতে ভাষা শেখা, হাত ধরে হাটা
অতি যত্নে লালন করে, গুটি পায়ে চলা ।
হাত দিয়ে খানা খাওয়া, হাত দিয়ে লেখা
মায়ের হাতের রান্না খেয়ে, বড় হতে চলা ।
কৈশোরে মোর দিন কেটেছে, বিদ্যালয় ঘিরে
অপেক্ষায় থাকতো মা, কখন বাছা ফেরে ঘরে ।  
হারিয়ে যেন না যাই আমি, থাকতো সে পিছে লেগে
আদর মাখা ছায়া দিয়ে, আঁচলেতে রাখতো বেঁধে ।
ভোর হলে ডেকে তুলে, প্রাতঃ কাজ শেখাতেন
সন্ধ্যা পরে, নামাজ শেষে পড়ার জন্য বসাতেন ।


যৌবনে এসে মহারাজা; মায়ের কথা না শুনে
নিত্য-নতুন বিপদে পড়ে, তাড়া খেয়েছি সংগোপনে ।  
বুঝে না বুঝে কত বকেছি, নিঃস্বার্থ ঐ মানুষটিকে
তবুও তিনি রাগ না করে, দোয়া দিয়েছেন মন খুলে ।  
মা-জননী সামনে যাদের, তারা কত ভাগ্যবান
সেবা দিলে বেহেস্ত হবে, হাদিসেতে আছে প্রমাণ ।
এই দুনিয়ায় মায়ের সমান কিছুই নেই দামি                  
জীবন চলার প্রতি ধাপে, তাকেই যেন মানি ।
প্রিয় জননী, যাদের ছেড়ে গিয়েছেন ঐ পরলোকে
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, দোয়া দিব প্রভুর কাছে ।।