কেন এমন হলো, একি ভাগ্যের লিখন নাকি
ব্যর্থতা। দুই’শ বছরের শৃঙ্খল ভেঙ্গে খণ্ডিত ভূমি চায়নি
বর্বর ইংরেজ যাতাকলে পিষ্ট গোটা ভারতবাসী
তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, শত প্রাণের আত্মাহুতি
সিপাহি বিদ্রোহে রক্তের বন্যা, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা
সুযোগ বুঝে ইংরেজদের যত কুট চাল-ভণিতা
সাথে স্বদেশী দালাল-জমিদার, বরকন্দাজ, মহাজন
যাদের পাতানো জালে জড়িয়ে লাখো ভারত সন্তান
হয়েছে শোষিত-নির্যাতিত। তবু থামেনি অত্যাচার
শুরু হলো বৃটিশ তাড়াও, স্বদেশ বাঁচাও, বজ্রকঠিন হুংকার ।


উত্তাল আন্দোলন শুরু হলো গোটা উপমহাদেশে
কবি-সাহিত্যিকেরা ও কলম ধরল দেশ বাঁচাতে
কবি নজরুল গর্জে উঠে- ‘এদেশ ছাড়বি কিনা বল’
বিশ্বকবি ও বর্জন করে ‘নাইটের’ উপহার
চতুর্দিকে লাখো নির্ভীক প্রতিরোধে দাঁড়িয়ে
রুখে দিতে যত ইংরেজ, জমিদার, নায়েব-গোমস্তা
তামাম ভারতবর্ষ আগুন হয়ে গর্জে ওঠে
বিদ্রোহ দমাতে চলে নানাবিধ নিষ্ঠুর নিপীড়ন
পূর্ব বঙ্গের হক, সোহরাওয়ার্দী পশ্চিমের দেশবন্ধু, সুভাষ বসু
নেহেরু, প্যাটেল, জিন্নাহ মিলে দুর্বার কঠিন আন্দোলন ।


মহাত্মার ‘অহিংস নীতি’ পেয়েছিল বিশ্ব খ্যাতি
খণ্ডিত ভারত, তিনি কখনই চাননি
তবুও বাড়াবাড়ির শেষ ছিলনা, নেতায়-নেতায়
‘হিন্দু-মুসলিম’ বেশ জনপ্রিয় সে সময়
তাই কতিপয় হিন্দু নেতা আর জিন্নাহ মিলে
জাতি ভেদের চরম নেশায় পাগলপারা হয়ে
ধৈর্য পরিক্ষায় যেন ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিলো
ব্যর্থ বলা অপমান, ভক্তের কাছে তারা মহান
সাম্প্রদায়িকতার জ্বরে মহাভারত তখন উত্তাল
মানুষের কি দোষ বলো, তারা তো নেতা নয় ।


অখণ্ড ভারত রক্ষায় মাওলানা আজাদ,স্মরণীয় নাম
শত চেষ্টা করেও তিনি, পারেনি ঠেকাতে বিভাজন
শেষ লর্ড ব্যাটেন আসে ‘দ্বি-খণ্ড ভারত’ মাথায় নিয়ে
ব্রিটিশরা জানতো, ভারত ভাগ হলে আর্থিক শক্তি হারাবে
তাই ‘হিন্দু-মুসলিম’ আগুনে বাতাস দিয়ে করত খেলা
অথচ উন্মাদ জনগণ বোঝেনি, বিভক্তিতে শক্তি ক্ষয়
ভারত ভাগ না হলে, পরা শক্তি হয়ে, করতো বিশ্ব জয় ।


হিন্দুস্থান, পাকিস্তান হয়ে গেল কি উৎসাহ নিয়ে
লাভে পেল নেতারা, চলবে একক ক্ষমতা
ভাবতে পারেনি মোরা, দেশ হলো সবার উপর
যেখানে রবে উঁচু-নিচু, নানান জাতির বাস।
‘মদিনা সনদ’ লিখিত পৃথিবীর প্রথম সংবিধান
যে রাষ্ট্রে ছিল, ইহুদি-নাসারা-মুসলমান-খ্রীস্টান
মহানবীর সেই আদর্শ শিক্ষা ভুলে গেছে মুসলমান
যাদের ভারতে ইতিহাস আছে, প্রায় সাত’শ বছরের সুশাসন
স্বাধীনতার পরে আজ ও কেন দুই ‘স্থান’-এ দাঙ্গা চলে ?
সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কি যে ঘটে গেল, কেন এমন হলো ।।