এস্ট্রোনাটদের কয়েকজন অবসরে  কবি বনে যাবার নজীর আছে
আমি আলোক-ঊচ্চ-গতির প্রথম জেট রকেটের প্রথম পাইলট
পরীক্ষামূলক প্রথম ফ্লাইটেই যান্ত্রিক গোলযোগ আমার হাইপারলাইট জেটে
নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে কোর্স থেকে সরে ধ্বংস হতে যাচ্ছে-
আমি প্যানেলে অল্টিটিউড, পৃথিবী সাপেক্ষে পজিশান এসব দেখার আগেই
অটোমেটিক বেল-আউট, নভোচারীর পোষাকে মহাশূণ্যে নির্গমণ।


মূর্ছিত আমি জেগে উঠেছি এক অজানা ভূখন্ডে--
এতো স্বর্গ নয় , নয় নরকও - অনেকটা পৃথিবীরই মতো, সবুজ ঘাসে পড়ে আছি
আমি আর আমার বিচিত্র-দর্শণ বিধ্বস্ত প্যারাস্যুট
সামনে  টাক মাথার দাড়িওয়ালা লোকটিকে বিশেষ ভ্রুর জন্য চেনে চেনা লাগছে
এগিয়ে এলেন--
“ আমি আইনি, বার্টিও বলতে পারো,তোমার পৃথিবী আমাকে চেনে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন নামে।
তুমি গতির বাধা অতিক্রম করে কোন এক অজানা প্রক্রিয়ায় চলে এসেছো প্যারালাল ওয়ার্ল্ডে- আমাদের সমন্বিত গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে তোমাকে  ক্ষণকালের এ আগমনে স্বাগতম।
সময় বড় কম ,চল একটু আপ্যায়নে।“


দেখলাম এখানে বিজ্ঞান বেশ এগিয়ে-সব প্রাকৃতিক- সম , প্রায়শই  নমনীয়-
খাবারে ছুড়ি- কাঁটা চামচ সবই নরম-শুধু খাবার আগেই হয়ে গেল শক্ত- খাওয়া শেষেই আবার তা নমনীয় পদার্থ, যন্ত্র নয় যন্ত্রের মত-  তারহীন-ধোয়া -শব্দহীন প্রাকৃতিক বস্তু সদৃশ্।


আচমকাই বলেছিলাম- “ আপনাদের এখানে কবিতা হয় না ?”
হেসে বললেন - , “ এ প্রশ্নের অপেক্ষায় ছিলাম, কারন এখানে তোমার কপি আমাদের বিখ্যাত
সাই-ফাই-কবি, কাকতালীয়ভাবে নিখোঁজ , তার মহাশূন্যের গ্রহ-বাগানে  ঘুরতে যেয়ে। যাহোক, তোমার প্রশ্নের উত্তর হল- এখানে কবিতা -গান সব হয় একটি ভাষাতেই , সে ভাষা সবাই জানেও ।“


- “ তোমার শরীর বুঝতে পারছো গরম লাগছে - এ জ্বর নয় -আমাদের কোয়ারেন্টাইন বডি ডিকম্পোজিশনিং -তোমাকে এ পরিবেশে বেশীক্ষণ বাঁচানো যাবে না -তাই বডি প্রিজার্ভেশন প্রসেস চালু হল - ব্যাথামুক্ত মুক্তি - বডি রিফর্ম করে আমরা ঐ পৃথিবীর তথ্য পাবো -পাবোনা তোমাকে-কারন আত্মা চলে যাবে সৃষ্টি কর্তার কাছেই । তোমার প্রিয় গান শুনতে শুনতে তবে বিদায়---“


আমার কানে ভাসছে - ,” জীবনে আমার যত আনন্দ পেয়েছি ----“
আমি কায়মনে জপে যাচ্ছি- “ ইন্না লিল্লাহে............।“