বৈ শা খী মেলা-
উৎসবের আমেজ চারিদিকে - হৈ হৈ রৈ রৈ
রঙের রঙধনু যেন মাটিতে নেমেছে আজ
রঙ বেরঙের ঝলমলে সাজ
আমি উল্লাসের ঢেউ সাঁতরে ঘুরছি মেলা-প্রাঙ্গণ
তেষ্টা মেটানোর চেষ্টায় এবার এসেছি আইসক্রীম কর্ণারে
হঠাৎ কোথাথেকে ছুটে এসেছে এক নীল পরী
নীল-সাদা বলপ্রিন্ট ফ্রক-পনিটেল-নিমিষে দখল আমার তর্জনী
“বাবা, তুমি কোথায় ছিলে? আমি আর বাড়ী যাবো না
আমি তোমার সাথে থাকবো।“
ছল ছল নীলাভ চোখদুটো থেকে যেন এখনি
গড়িয়ে নামবে অভিমানের অশ্রু।
আমার হাজার বছরের তৃষিত বাবা সত্ত্বা জেগে উঠেছে
“মামনি, চল , আইসক্রীম খাই আগে।“
আমার নতুন মেয়ে তার পছন্দের বিষয়গুলো বলছে
আমি মনোযোগী শ্রোতা হয়ে শুনছি- পুলকিত হচ্ছি।
অকস্মাৎ আধুনিকা মায়ের আবির্ভাব-
একপ্রকার ছিনিয়ে দখলে নিলেন মেয়েকে-
‘কতোবার বলেছি, হাত ধরে থাক, ফাজিল কোথাকার!”
আমার প্রিন্সেসকে একপ্রকার টেনে ছেঁচড়ে নিয়ে চললেন মা
ব্যাথিত আহত ব্যাকুল সর্বহারা দৃষ্টিতে মেয়ে ফিরে ফিরে দেখছে
আমাকে- দু’চোখে রাজ্যের অবিশ্বাস, হয়তো হতাশা
তুলতুলে ছাড়া হাতটি দিয়ে মুছছে চোখের কোন- ভেজা গাল
দূর থেকে শুনলাম অস্ফুট উচ্চারণ -
“বাবা, তুমি যেও না, আমি তোমার......।“
আমি বিব্রত হবার বদলে সজল অবাক
সুখদুঃখ একসাথে এভাবে আমাকে কখনো আক্রমণ করেনি আগে
বোধ হয় কালবৈশাখী নামবে- ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়ছে মাথায় , আশেপাশে
আমি স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে বিহবল এই দিকভ্রান্ত প্রহরে-
মনের মধ্যে বৃষ্টির ফোঁটারা আছড়ে পড়ছে সজোরে-
মনের পলিতে তাদের সংঘর্ষে -
আসছে আর্ত চীৎকার একে এক
“বাবা, বাবা, বাবা।“