ইটালীর ছোট্ট শহর নীসে রাত নেমেছে
জানার আলো জ্বালাতে,অজানার অন্ধকার সরাতে ,
মান-মন্দিরের দূরবীনে চোখ রেখে হতবাক গ্যালিলিও।
মগ্ন গ্যালিলিও গ্যালিলির দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছে
অচেনা মহাশূন্যের অনন্ত বিস্তারে ---
শনির বলয়টাকে দেখে ফেলেছেন তিনি
দেখেছেন বৃহস্পতির চার-চারটে চাঁদও --
ছড়িয়ে পড়লো মহা আবিষ্কারের খবর দিক-বিদিক--
উৎসুক মানুষেরা আসছে ছুটে নীস অভিমুখে মহাকাশের টানে--


কোপার্নিকাসের তত্ত্ব --“পৃথিবী ঘুরছে সূর্যের চারদিকে “ -কে
সমর্থন জানালেন -গ্যালিলিও --তিনি জেনে গেছেন সত্যটা।


ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরী হলোনা চার্চের-
“গ্যালিলিও, তুমি যত বড় বিজ্ঞানীই হও , তুমি ধর্মবিরোধী।”
একদিকে চাক্ষুষ প্রমাণ ,অন্যদিকে ধর্মের অপব্যাখ্যা--
‘গেলো গেলো ,ধর্ম গেলো, রোধ কর , বধ কর “--উঠলো শোর
ক্ষমতাশালীদের বিচারে আকাশ দেখার অধিকার নেয়া হলো কেড়ে
অন্তরীণ বৃদ্ধ সত্য জানার ,বলার অপরাধে হলেন দন্ডিত।
গৃহবন্দী গ্যালিলিওর মনোযাতনা আরো বৃদ্ধি করতেই যেন
এলো আকস্মিক অন্ধত্ব---
জীবনের শেষ পাঁচটি বছর অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে থাকা
মানুষের ভিড়ে নিজেও শারীরিক অন্ধ হয়েই কাটালেন
মহাকাশের বিশালতায় বিচরণকারী এক পার্থিব পথিক ।


তারপর কেটে গেছে কতো সে কাল--------
কতো মানুষ এসেছে ,চলেও গেছে এই পৃথিবী ছেড়ে
এই সত্যটুকু না জেনেই--“পৃথিবী ঘুরছে সূর্যের চারদিকে।”


হে মহাজ্ঞানী গ্যালিলিও-
স্রষ্টার মহা সৃষ্টি দেখতে উৎসুক তোমরাই ছিলে প্রকৃত ধার্মিক
খুলে দিতে চেয়েছিলে আমাদের চোখ
কিন্তু আমরা যে চোখ বুজে থাকতেই শিখে এসেছি ।