চোখের রেটিনায় শুধু ধরা পড়ে
লাল, নীল আর সবুজ
মগজ মোদের কতো রঙ গড়ে
আমরা জানিনা ,অবুঝ।


প্রকৃতি মাঝে রঙেরই খেলা
রেখেছে যে পরম দাতা
নীল মানে বুঝি আকাশ কি জল
সবুজ গাছেরই পাতা।


জিনিষের প্রতিশব্দ যেন রঙ
রঙের প্রভাবই এমন
প্রাচীনকালে প্রকৃতি থেকে রঙ
বানাতো যখন তখন।


কাঠচন্দন, মেহেন্দি, হলুদ
আরো রঙ হতো ফুলদলে
প্রাচীনকালের আঁকা গুহাচিত্র
মোদের সেই কথা বলে।


লাল রঙ সে তো ভালোবাসারই
জীবনীশক্তি সে বাড়ায়
তীব্র লালে নাকি বিপদ আছে
মানুষেরা ধৈর্য্য হারায়।


গোলাপী শান্ত করে সবাইকে
কমায় সকল নিরাশা
স্বার্থহীন ভালোবাসার  রঙ সে
কোমল মনের পিপাসা।


কমলা রঙটি মনকে জাগায়
দূর করে সব হতাশা,
সবুজ সর্বদা শান্ত করে যায়
যদিও ঈর্ষা থাকে ঠাঁসা।


হলুদ খুশী ও বন্ধুত্বের প্রতীক
সহায় সিদ্ধান্ত গড়তে
আশাবাদী চিন্তার প্রভাবক সে
জীবন সংগ্রামে লড়তে।


নীল ,সৃষ্টি আর স্পষ্টতার রঙ
গাঢ় নীল কিন্তু অস্থির
বেগুনী, সুচিন্তা ,চেতনা বাড়ায়
ভয় ঘোর থেকে সুস্থির।


কালো রঙ আনে রহস্যময়তা
সুরক্ষা, আরামও তারই,
সাদা, পবিত্রতা ,মানসিক শান্তি
হটায় মনের সে ভারই।


ধূসর, নেতিবাচক বলে জানে
সারা জগতের সবাই
রূপালী আবার চাঁদের উপমা
বোঝায় শুভ্রমন সদাই।


বাদামী আনে নিরাপত্তা মনে
স্থিরতাই আনে জীবনে
সোনালী ,শক্তি, সম্পদের প্রতীক
হাসে তীক্ষ্মতার কিরণে।


এ জগত জুড়ে কতো প্রানী আছে
জানে না রঙ কি রহস্যের
রঙের সূক্ষ্মতা বিচার করার
ক্ষমতা শুধুই মানুষের।


-------------------------------------------------------------------------
@#@ ‘কালার থেরাপী’ বলে চিকিৎসায় নিরাময় করা যায় অনেক অসুখই। যেমনঃ
বেগুনী  ঃ সেরিব্রাল কর্টেক্স , নার্ভাস সিস্টেম
নীল ঃ পিটুইটারী গ্লান্ড , নাক ,কান , চোখ
আকাশী ঃ থাইরয়েড , কন্ঠ, মুখ
সবুজ ঃ হার্ট , হাত , ফুস্ফুস , সংবহনতন্ত্র ।  --ইত্যাদি ।
---------------------------------------------------------------------------
জগদ্বিখ্যাত শিল্পীরা অনেকেই রঙের বিভিন্ন শেড দিয়েই চেনার চেষ্টা করেছিলেন গোটা পৃথিবীকে । ভ্যান গগ প্রভঁস বেড়াতে গিয়ে তার ভাই থিওকে চিঠিতে লিখেছিলেন ,” এখানকার ল্যান্ডস্কেপ উজ্জ্বল হলুদ রঙের পাথরে ভরা, গাছের পাতা অলিভ -গ্রীন বা গ্রে -গ্রীন ...।এখানকার শস্যখেতে একটা লালচে আভা আছে আর পাহাড়্গুলো যেন সুন্দর লাইলাক শেডে আঁকা ......।।“ রঙের মধ্যে প্রকৃতির হারমনি খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি।তার আঁকা ছবি দেখলে বুঝা যায় ,রঙের ব্যবহারে আশ্চর্যভাবে প্রকৃতি আর মানুষকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিনি। রঙের মধ্য দিয়ে আলো আর আঁধারকে একাকার করে দিতে পারতেন তিনতোরেত্তো, তিশিয়ান, জত্তো, সেজান , রেনোয়া বা রেমব্রান্টের মতো শিল্পীরা। রঙের মাধ্যমে তারা  আনতে চেয়েছেন বিভিন্ন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য আবেদন। সুখ দুঃখ হাসি কান্না এই অনুভূতিগুলো তাদের ছবিতে যেনো এক-একজন মানুষ । স্রেফ রঙ ব্যবহারেই ফুটে উঠেছে তাদের আসল চেহারা। এইসব শিল্পীদের ক্ষেত্রে রঙের ব্যবহার দেখলেই গোটা ছবিটার মুড ভেসে ওঠে চোখের সামনে ।
----------------------------------------------------------------