শতাব্দীর পর শতাব্দীর গন্ধ গায়ে মেখে
প্রাচীন স্বর্ণমূদ্রাটি ঔজ্জ্বল্য ছড়াচ্ছে আমার হাতের তালুতে।
আমি হাঁটছি পেছনের পথে
ইতিহাসের স্বর্ণালী পথ ধরে --
গৌরবের সাথে অভিশপ্ত দীর্ঘশ্বাসও জড়িয়ে আছে এর সাথে--
অনেকবারই রক্তের দাগ মোছা হয়েছে এর শরীর থেকে।
কতো যে ষড়যন্ত্রের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে এ মোহর, কে তা জানে !
আজকের সূর্যের তীব্র কিরণে মোহরের উজ্জ্বলতা
আমার মনে এনেছে তার প্রতি প্রবল সমীহ ।
এই প্রাচীন সূর্যের আলোতেই ঝকমক করে এই সোনার মোহরই
কতো শত মানুষকে করেছে প্রলুব্ধ--
অধিকারে আনতে তাকে ,ন্যায়-অন্যায় ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অনেকে অন্যের উপর।
আমি দেখছি , রাজদরবার থেকে উপঢৌকন হয়ে উঠেছে
কারো হাতে সগৌরবে এই সোনার মোহর।
সমূদ্র পাড়িও দিয়েছে সে, পড়েছে নির্মম দলদস্যূর কবলেও।
তার মূল্যবান রূপ লোকচক্ষুর আড়াল করতে
রাখা হয়েছে তাকে মাটি খুঁড়ে , কখনো বা তামার ঘড়ার অন্ধকার বদ্ধতায়।
কারো কাছে সে হয়েছে ঐশ্বর্য্য , কারো কাছে অভিশাপ।
সোনার মোহর যেন ইতিহাস বলে আমায় নিঃশব্দ উচ্চারণে,
অক্ষয় উজ্জ্বল সোনার মোহরের সাথী হয়ে আমি ভাবনায়
কালের ঘোড়-সওয়ার হয়ে ছুটে চলি রাজ্য থেকে রাজ্যে
উত্তাল তরঙ্গ বিক্ষুদ্ধ সমূদ্রে পালতোলা জাহাজের অনিশ্চিত গন্তব্যের যাত্রী হয়ে
বিস্তৃত মরুভূমি ,সীমাহীন ঘন বন , অবিন্যাস্ত জনপদ ঘুরে ঘুরে--
আমি প্রাচীন সোনার মোহরের রোমাঞ্চকর পথ পরিক্রমায়
কালের কুয়াশা ভেদ করে অজান্তে শামিল হই ।