মধ্যরাত
নিস্তব্ধ চারদিক
শুক্লপক্ষের নবমী চাঁদ
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়
অথচ আমি চোখ তুলে তাকাতেই
মেঘের আড়ালে সে হারিয়ে যায়।
ঝি ঝি পোকার এক অপার্থিব সুর
ভেসে আসে কানে।
ঠোঁটের স্পর্শে তিলেতিলে নিঃশেষ হয় সিগারেট।


নিজেকে পৃথিবীর প্রথম মানব
আদম ভাবতেই;
তুমি হাওয়া হয়ে এসে সামনে দাড়াও।
তোমার প্রলোভনে গন্ধম খেয়ে
অভিশপ্ত হয়ে ফিরে আসি পৃথিবীতে।
অথচ আমাদের জান্নাতে থাকার কথা ছিলো!


গ্রীক পুরাণের কোন এক বীর ভেবে নিজেকে শান্তনা দেই।
অথচ আমি বীর নই।
যুদ্ধের ময়দানে যতটুকু হিংস্র যোদ্ধা
ঠিক ততটুকু প্রেমিকও হতে পারিনি।
পৃথিবীর সমস্ত পবিত্র গ্রন্থের মহামানব, প্রেমিকও ছিলো; যোদ্ধাও ছিলো!
আমিও তো এক মহামানবের অনুসারী।
অথচ আমি না হতে পেরেছি যোদ্ধা;
না হতে পেরেছি প্রেমিক!


দাড়িওয়ালা বুড়ো রবি ঠাকুর কিংবা ঝাকড়া চুলের বাবরি দোলানো নজরুল
আমার মস্তিষ্কের নিউরনে নিউরনে
বসে আড্ডায় মশগুল থাকে।
কখনো গান গেয়ে উঠি হঠাৎ
কখনো ভূমিষ্ঠ হয় প্রেম অথবা দ্রোহের কবিতা।


প্লেটো, এরিষ্টটল উঁকি দেয় মনের জানালায়।
রাষ্ট্রের চরিত্র হরনকারী শাসক শ্রেণী
লোহার শিকল গলায় না পরে
ফুলের শিকল ঝুলিয়ে রাখে;
অপমানিত ফুল লজ্জায় মরে!


সৃষ্টিকর্তার মুখোমুখি হই;
প্রশ্নের বান ছুড়ে দেই।
কেন তুমি নির্যাতিতদের জন্য
মাটির পৃথিবীতে নেমে আসো না।
খুব জানতে ইচ্ছে করে
ওরা কি মরে গিয়ে
তোমার নরকে নাকি স্বর্গে বাস করে!
যদি স্বর্গেই বাস করে তবে পৃথিবীতে
কেন পাঠাও।
সৃষ্টিকর্তা নিশ্চুপ রয়;
উত্তর দেবার নেই সময়।


শুক্লপক্ষের নবমী চাঁদ
হঠাৎ মেঘের আড়াল থেকে বের হয়ে আসে।
আমি চোখ তুলে তাকাতেই
জ্যোৎস্নার আলোয় ক্ষত-বিক্ষত হই।
অথচ সে আলোয় আমার
পৃথিবী দেখার সাধ জাগে।


নিস্তব্ধ মধ্যরাত
নিঃশব্দে হেটে যাই নীলনদের তীর ধরে।
ফেরাউন তাড়া করে আমায়।
অথচ আমি
নিশ্চুপ পড়ে থাকি বিছানায়!