পল্লী দেখতে এসে ছিলো সাগরের এক ব্যাঙ,
দেহটা তার মস্ত বড় লম্বা লম্বা ঠ্যাং।
চোখ দুটি তার বাটির মত নাকটা যেন বাঁশি,
পল্লী দৃশ্য দেখে তাহার মুখে বেজায় হাসি।
আনন্দে এক গর্তের পাশ দিয়া যাইতে ছিলো,
হঠাৎ ক'এক ব্যাঙের সাথে দেখা হয়ে গেল।
গর্তের মাঝে যে ব্যাঙটা ছিলো সবার বড়ো,
তার ইঙ্গিতে আর যত ব্যাঙ এসে হলো জড়ো।
বড় ব্যাঙটা সাগর ব্যাঙকে বলে ওহে ভাই,
তোমার মত ব্যাঙ তো আমি কভু দেখিনাই।
এত বড় দেহ তোমার কোথায় তুমি থাকো?
ওমন মধুর গানগুলিই বা কোথা হইতে শেখো?
সাগরের ব্যাঙ বলে আমি থাকি সাগর নীড়ে,
পল্লী দেখতে আসিয়াছি তোমাদেরই দ্বারে।
অবাক হয়ে গর্তের ব্যাঙ বলে ওহে ভাই,
সাগর আবার কাকে বলে এ তো শুনি নাই।
সাগরের ব্যাঙ বলে সাগর দেখবা কেমন করে,
তোমরা তো সব পড়ে থাক এই গর্তের ভীতরে।
গর্তের ব্যাঙ বলে ভাই বলো দেখি তুমি,
সাগর আবার কেমন জিনিস আমরা একটু শুনি।
সাগরের ব্যাঙ বলে সাগর বিরাট জলাশয়।
কেমন করে তোমাদেরে দেব পরিচয়।
গর্তের ব্যাঙ বলে নিজের গর্ত দেখাইয়া।
এর চাইতেও বড় নাকি সাগর ওহে ভাইয়া.?
সাগরের ব্যাঙ বলে ওহে গর্তের ব্যাঙ ভাই।
সাগরের সাথে এর কোন তুলনা ই তো নাই।
গর্তের ব্যাঙ বলে না হয় এর ডাবল হবে,
তার চেয়ে বড় সাগর কেমন করে হবে.?
সাগরের ব্যাঙ বলে তোমরা সবাই পল্লী বাসী,
তোমাদেরই কথা শুনে আমার লাগে হাসি।
সাগর কত বড় তা ভাই বোঝাবো কি করে.?
সে কথা তো তোমার আমার চিন্তারও বাহিরে।
গর্তের ব্যাঙ বলে না হয় চতুর্গুণই হবে,
তার চেয়ে বড় সাগর কেমন করে হবে?
সাগরের ব্যাঙ বলে তোমরা থাকো পাড়া গাঁয়।
সাগর বোঝানো আমার পক্ষে মহা দায়।
চতুর্গুণ হাজার গুন লক্ষ গুনই ধরো,
তার চাইতে কোটি গুন সাগর হবে বড়।
সাগরের কথা আমি কি বলিব ভাই,
অকুল সাগর তার কুল কিনারা নাই।
এক কুলে থাকি মোরা দেখি শুধু পানি,
আর এক কুল কোথায় আছে আমরা নাহি জানি।
এত শুনি গর্তের ব্যাঙ সব হাসিয়া উঠিলো,
নির্বোধ বলে তারে বিদ্রুপ করিলো।
সাগরের ব্যাঙ বলে আমি নির্বোধ অতিশয়।
সত্য কথা কইতে গেলে নির্বোধ হতে হয়।
তোমরা যদি কোনদিন সাগর পাড়ে যাও,
নিজ চোখে সাগর যদি দেখিবারে পাও।
তখন বুঝিবে সাগর কেমন জলাশয়।
এত বলি সাগরের ব্যাঙ লইলো বিদায়।


_____আলহাজ্ব কবি এস এম আব্দুস সাত্তার।
______হিদিয়া,অভয়নগর, যশোর।