(অপরাধবোধে বয়ে চলা প্রতিটি দিন সিরিজ)

আমি প্রতিদিন হেঁটে যাই এক ধোঁয়ার দেশে,
যেখানে গাছেরা কাঁদে পাতাহীন শোকগাথায়,
আর পাখিরা ডাকে না—
তারা চোখে মুছে নেয় অদৃশ্য শীতের অভিমান।

পায়ের নিচে নেই মাটি,
শুধু কুয়াশা,
যেন ভুলের চাদরে মোড়া এক অব্যক্ত গলিপথ,
যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ
একটি না বলা ক্ষমার আর্তনাদ।

সেই দেশে সূর্য ওঠে না,
আলো আসে যেন নিজের দৃষ্টিহীনতায়—
ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু কিছুই উজ্জ্বল করে না।
হয়তো আমিই এমন চোখ পেয়েছি,
যেখানে আলো মানে আত্মপ্রবঞ্চনার তীব্র দহন।

স্মৃতি এখানে ঘাসের মতো,
ছুঁলেই রক্ত ঝরে—
তবুও আমি ছুঁই, প্রতিদিন,
কারণ ব্যথাই এখন আমার একমাত্র পরিচয়পত্র।

আমার হাত দু’টি যেন ধোঁয়ার তৈরি,
যা ধরতে চায় নিজেকেই,
কিন্তু প্রতিবার ঘুরে ফিরে—
শুধু ফসকে যাওয়া আত্মার ছায়া খুঁজে পায়।

অনেকেই বলে, “এ পথ ছেড়ে ফিরো,”
কিন্তু আমি জানি না কোন দিকে ফেরা যায়—
পিছনে ছড়ানো শব্দগুলো তো
সব অকথিত চিৎকার হয়ে গেছে,
যেগুলো আর ভাষা হয় না,
হয় শুধু হাহাকার।

আমি এক পথিক—
যে কোনো গন্তব্যে যায় না,
শুধু হাঁটে,
দাঁড়ালে; ভুলের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে শরীরের প্রতিটি কোণে।

ধোঁয়ার ভিতর একটা দরজা আছে,
আমি প্রতিদিন ওটাকে দেখি—
কিন্তু খুলি না,

ভেতর থেকে কে যেন
কাঁপা কণ্ঠে ফিসফিস করে বলে,
“তুমি আসতে পারো না,
তুমি এখানের কেউ নও।”

জুন ১৫, ২০২৫ রাত ৯টা
মিরপুর,  ঢাকা