ভিক্ষা বৃত্তি কেন বলছো
আমি তো একে, সাহায্য করা বলি;
একে অপরের সাহায্য নিয়েই সবাই বাঁচে
আধুনিক শিক্ষা আর মিথ্যে দম্ভ
পরাজিত হয়, জীবন দর্শনের কাছে।


বলছিলাম
এক রাতে আমার পাল্টে যাওয়া
আহমিয়া আর আধুনিক শিক্ষার ধারালো যুক্তি
একটি জীবন দর্শনের কাছে
পরাজিত গল্প, অবশেষে মুক্তি এবং প্রশান্তি।


বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে যেতে
অস্থির বাবার, জানালার কাঁচ খুলে
হাত বাড়িয়ে থাকা প্রতিবন্ধীকে সাহায্যের আদেশ
হতভম্ব আমি,
কেন সাহায্য দেয়ার জন্য এত ব্যাকুল ফরমায়েশ !!


রাতে, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বাবা
নানা গল্পের ছলে ইনিয়ে বিনিয়ে
কোন আদেশ কিংবা নয় নির্দেশ,
পেতে থাকা সাহায্য প্রত্যাশী হাতকে ফিরিয়ে না দেয়ার উপদেশ।


জিজ্ঞাসু মন নিয়ে বলি
ভিক্ষা বৃত্তিকে কেন আমরা প্রমোট করি?
ভিক্ষা পেশাকে কেন উৎসাহিত করি?
কেনই বা, ঠগ বাটপার ভিক্ষা ব্যবসায়ীকে এভাবে বাঁচিয়ে রাখি?


ভিক্ষা বৃত্তি কেন বলছো
আমি তো সাহায্য করা বলি;
আমি হাটতে পারি না, উঠে দাঁড়াতে তোমার সাহায্য নিয়ে চলি
আবার বাচ্চা শিশুকে আঙ্গুল ধরে, উঠে দাঁড়াতে বলি;
কারো টাকা দরকার, কারো বাড়িয়ে দেয়া হাত দরকার
কারো চাকরী, কারো অসুস্থ অবস্থায় সেবা, আবার কারো দুঃসময়ে কাছে থাকা;
সব কিছুই আমি সাহায্যের মধ্যেই ফেলি।


আমি জীবনে কারো হাত ফিরিয়ে দিইনি
কোন প্রত্যাশাকে অবমাননা করিনি
সাধ্যকে অতিক্রম করে, অহমিকাও করিনি;
কই, আমার তো সম্পদ কমেনি
আমি তো জীবনের কাছে হেরে যাইনি
কষ্ট হয়েছে কিন্তু সাত ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে ব্যর্থ হইনি
তবে, মানুষকে সাহায্য করতে কেন ভয় পাও, আজও বুঝিনি।


বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যাশিত হাত
একটু সাহায্যের জন্য হাত
বাড়িয়ে দেয়া মানবতার হাত
তাতে নেই কোন ধর্ম কিংবা জাত পাত;


পাল্টে গেল সব, ওলটপালট হয়ে গেল সব
ক্ষনিকের জীবন দর্শন, ক্ষনিকের শিক্ষা
চূর্ণ বিচূর্ণ এতদিনের যুক্তি, এতদিনের অহমিকা;
প্রশান্তিতে মন ভরে থাকা
নুতন পথে চলার দীক্ষা
হাসপাতালে বাবার সাথে এক রাতের শিক্ষা ।


অগাস্ট ১২, ২০১৮
মিরপুর, ঢাকা