আলোচনা  ১৯৩


কবিতা সাধারনত ইস্যু/থীম ভিত্তিক হয়ে থাকে, অন্তত বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে। ইস্যু হিসেবে প্রেম, বিরহ, দেশপ্রেম, বিদ্রোহ, মানবতা, প্রকৃতি, একাকীত্ব, দহন, নীরবতা, বিচ্ছিন্নতা, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, নারী মুক্তি, নারী স্বাধীনতা, বিশেষ কোন দিবস……ইত্যাদি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। আবার সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাবা মা এর প্রতি ভক্তি, গুরুভক্তি দেখা যায়। এছাড়াও থাকে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব, আস্তিকতা, নাস্তিকতা ইত্যাদি।


আলোচ্য কবিতা “বয়সটা আবেগের”, কবি শ্রী সজীব্ চন্দ্র খাসকেল, একটু ব্যতিক্রম ধর্মী কবিতা উপহার দিয়েছেন আসরে। মানুষের জীবন চক্রের একটি সময়কে বা একটি অধ্যায়কে কেপচার করেছেন এবং সেই বিশেষ অধ্যায়ে থাকা মানুষটির চিন্তা চেতনা, ধ্যান ধারনা, ভাবনা, মূল্যবোধ এবং চারপাশের প্রভাব ইত্যাদি ফোকাস করা হয়েছে অর্থাৎ মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ন একটি সময় যাকে কৈশোর কাল বলা হয়। বয়সটা ধরা হয় আনুমানিক ১৪ থেকে ১৮ পর্যন্ত। এই সময়ের সর্বোচ্চ সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহারই তার পরবর্তী জীবনের গতিপথ নির্ধারন করে থাকে (কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে)। কবি এই বয়সের, এই সময়ের কথাই পুরো কবিতা জুড়ে বর্ননা করেছেন ধাপে ধাপে।


ষোল বয়সটা বড় আবেগের, এই বয়সেই আবেগী সুর উথাল পাতাল ভাব হয়ে আসে,  অবুঝ মনে সব লন্ড বন্ড করে দেয়, প্রেমের ছন্দ মনে দোলা দেয়, মনের বাধ ভাঙ্গা জোয়ারে সব নিষেধ বারনকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চায় অজানার পথে।


এই বয়সেই, চরম ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে, ভুলের মাসুল হিসেবে আত্মহত্যার মতো বিধ্বংসী কাজ করে ফেলতে পারে, যে কোন রকম দুর্ঘটনা ঘটানোর মতো ম্যাচুউরড ভাবনা থাকে না, ফলে অপ্রত্যাশিত নানা ঘটন অঘটনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে সময়।


দুরন্ত এই বয়সে, যে কোন বাঁধা অতিক্রম করার ইচ্ছে জাগে, হাজার মাইল পাড়ী দেয়ার মনোবল থাকে, দুর্বার এক ইচ্ছাশক্তি নানাভাবে দুরন্ত করে রাখে আবার এই বয়সে নানা উদ্ভাবনী শক্তিও জাগে মনে। কেউ কবিতা লিখে, কেউ চিত্রাঙ্কনে ঝুকে পরে আবার কেউ বা সাহিত্যের অন্যান্য শাখায় মনোনিবেশ করে।


বয়সটাই প্রেমিক/প্রেমিকা হয়ে ওঠার, অন্যকে দোলা দেয়ার, দুজনে দুজনার হয়ে স্বপ্নে উড়াল দেবার। বাস্তবতাকে অস্বীকার করে সপ্নের পাখা মেলে হারিয়ে যাবার, লজ্জায় গোলাপী আভায়, নিজেকে হারিয়ে ফেলার আবার প্রচন্ড মানবিক আয়োজনে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখার।


বয়সটা আবেগের, কবি এই বয়সের নানামুখী আবেগকে ফুটিয়ে তুলেছেন বেশ চমৎকারভাবে।


কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা।