আলোচনা ৬১


প্রেমের কিংবা বিরহের কবিতা প্রতিদিনই শত শত লেখা হয়।  প্রেম এবং বিরহ মানুষের অনুভুতিতে এত বেশী সোচ্চার থাকে, অনেকেই খুব সহজেই প্রেম কিংবা বিরহের কবিতা লিখতে পারেন। আবার প্রেম কিংবা বিরহের সাথে প্রকৃতি প্রদত্ত অনুভুতির সম্পর্ক বেশী থাকায় মানুষ অনেকে বেশী প্রেম/বিরহের কবিতা লিখে থাকে। এক হাজার প্রেম/বিরহের কবিতা নিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, কেবল উপমা, শব্দের ব্যবহার কিংবা প্রেক্ষিতের ভিন্নতা ছাড়া অন্য কোন বক্তব্য নেই। এ কবিতাটিও অনেকটা সেরকমই কিন্তু উপস্থাপনের মধ্যে ভিন্নতা আছে। দৃষ্টি আকর্ষণের একটা ভিন্ন কৌশল আছে। হয়তোবা আমিও সেই কৌশলের জালে ধরা পরে আলোচনার জন্য ইচ্ছে পোষণ করছি।


জীবনের পরিসর বড় নাকি প্রেমের পরিসর, এ তর্ক হয়তো অনেকেই ডিম আগে নাকি মুরগি আগে এর সাথে তুলনা করবেন কিন্তু তর্কটা সামনে নিয়ে আসলাম প্রাসঙ্গিক কারনেই। প্রেম যখন জীবনের পরিসরকেও ছাপিয়ে যায় কিংবা প্রেম যখন জীবনের পরিসরের সাথে সার্বিক অর্থেই যুক্ত থাকে তখন জীবনের ব্যাকরণ আর প্রেমের ব্যাকরণ একই থাকে অন্যথায় প্রেমের ব্যাকরণ এবং জীবনের ব্যাকরণের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য দাবী করে।


কবি প্রেমকে জীবনের অনেকটা সমার্থক হিসেবেই দেখতে চেয়েছেন তাই জীবনের জন্য প্রযোজ্য এবং,অতঃপর,নতুবা, সুতরাং,তথাপি,কিন্ত  ইত্যাদিকে প্রেমের প্রাসঙ্গিকতা হিসেবেই দেখতে চেয়েছেন।  ভাবছিলাম, কবিতার শিরোনাম  ‘জীবনের ব্যাকরণ’ না লিখে ‘প্রেমের ব্যাকরণ’ লিখলে কি ক্ষতি হত!! পুরো কবিতা পড়ার পর বুঝলাম, প্রেম জীবনকেও ছাপিয়ে গেছে তাই ‘জীবনের ব্যাকরণ’ই কবির ভাষায় সঠিক।


গল্পটা যদি এমন হয়ঃ
তুমি এবং আমিই জীবন, সুতরাং তোমাকে ছাড়া আমার ভাবনা ভিত্তিহীন। কিন্তু তোমাকে বস্তুগত ভাবে না পেলেও আমার ক্ষতি নেই, তথাপি তুমি আমার অনুভূতিতেই স্থির নুতবা আমার মৃত্যু, তুমিই আমার জীবনের শেষ কথা, জীবনের সারাংশ...... এভাবে চলতে থাকলে, প্রেম জীবনকেও হার মানায়।  তাই হয়তোবা কবি প্রেমকে ‘জীবনের ব্যাকরণ’ হিসেবেই মেনে নিয়েছেন।


প্রেম খুব সাধারণ বক্তব্য কিন্তু অসাধারণ উপস্থাপনা। কবির জন্য রইলো একরাশ শুভেচ্ছা।