আমফানে ঈদ।


শণ শণ শণ, ঘুরছে ঘূর্ণি বন বন, আমফানের দানবীয় খেলা।
দমকা হাওয়ায়, বাড়ি ঘর ধ্বসে যায়, মড় মড় ভাঙ্গে গাছ পালা।
উদ্বেগে সবাই স্তম্ভিত, দেখেনি কেউ যারা জীবিত, হাওয়ার এমন তান্ডব।
দোকান পাট ঘর বার, ভেঙ্গে চুরে ছার খার, বিদ্ধস্ত কোলকাতার জনপদ।
ঝড়ের প্রলয় নৃত্য, চাক্ষুষ করেছে যে নেত্র, প্রাণ ছাড়া ভুলেছেন সব।
নজর যেদিক যায়, সারি সারি অসহায়, ছোট বড়ো গাছে দের শব।
       এক মহামারিতে রুদ্র দ্বার সবাই,
       চলবে কতদিন কারো জানা নাই,
       ঝড়ের ঝাপটায় খুলে গেছে দ্বার।


সংখার জোরে বানাও আইন,
বিপক্ষের সব মতবাদ অর্থহীন,
অদৃশ্যের কাছে কেন মানছ হার!


রাজপথে শায়িত দিন দিন, ভাঙ্গা চোরা অর্থহীন, শত শত বিদ্যুৎ খুঁটি।
মরমে আঘাত লাগে, ধ্বংসের মাঝে খড়কুটি খোঁজে, অসহায় চোখ দুটি।
উড়েছে বাড়ির ছাদ, সব কিছু বরবাদ, জলে বসে জলাভাবে কাটে দিন।
আশ্রয় হীন নিরুপায়, সামান্য ত্রাণের আশায়, অপেক্ষার প্রহর বড় কঠিন।
বুক জল পেরিয়ে, আশ্রয় ত্রাণ শিবিরে, কোনমতে বাঁচার ঠাঁই।
লোক শত শত, ত্রাণ অ-পর্যাপ্ত, চিঁড়ে মুড়ি যা পায় তাই খায়।
খবরের শিরোনাম হয়, বিদ্যুৎ পানীয় নাই, তার দাবীতে পথ অবরোধের।
জায়গা নাই পাতায়, উপকূল এলাকায়, ত্রাণ হীন মানুষ ও ছবি প্লাবনের।
ত্রাণ বন্টনে জালিয়াতি, স্বজন পোষন দুর্নীতি, সে তো নতুন কিছু নয়!
কিঞ্চিতে টানাটানি, অকারণ হানাহানি, মুফত খোর বানানোর হয় ভয়।
ঠিক প্রয়োজন যতখানি, যদি নিতেন অতখানি, বিশৃঙ্খল এড়ান যেত কিছু।
অপ্রয়োজনে দাঁড়িয়ে লাইনে, অধিকার তার আইনে, অভাব কি ছাড়ে পিছু!
অভাব যতনা অভাবে, বেশি হয় বুঝি স্বভাবে, অর্থ কি তাদের প্রতিবন্ধকতা?
দারিদ্রের এই অক্টপাশে, ভগবানও বুঝি হাসে, তাদের সমস্যা মানসিকতা।
এরই মাঝে আকাশে, শওয়ালের চাঁদ হাঁসে, আনন্দে শিশু মনে দোল খায়।
কর্মহীন বহুদিন বসে, চিন্তিত মন উদাশে, খুশির ঈদ কিভাবে মানানো যায়?
শিশুদের কচি মনে, কে কি ঢোকাল কে জানে, আবদার নাই কোন কিছু।
বড়োদের মত, যেন বড় হয়ে গেছে কত, তাদের মতই ভাবছে সব কিছু।
সিমাই লাচ্চা ফিরনি, সবেতেই টানা টানি, তবু হাঁসি মুখে কাটছে দিন।
রয়েছে জামাতে পাবন্দি, কাটো সব শিকল বন্দি, আজ যে ঈদের দিন।
মধ্য বিত্তের ঘরে, হাড়ি পাতিল ঠন্ ঠন্ করে, না পারে চাইতে না সইতে।
প্রচেষ্টার অন্ত নাই, যদি কোন কাজ পায়, মৃত্যু ভালো হাত পাতার চাইতে।