বাবরি ইতিকথা
স্বপ্নছায়া ( সেখ নাসিম আহাম্মাদ)


আমি ছিলাম বহালে, বিমাতার আমলে, যখন চলছিল ফিরিঙ্গি রাজ।
তারা হায়না ছিল, বটে তবু ছিল মোর,  ললাটে দাঁড়িয়ে থাকার তাজ।
কত আত্মবলিদান, দিয়েছে ভারত মাতার সন্তান, দাঁড়িয়ে দেখেছি আমি।
কত রক্তের বিনিময়ে, এনেছে স্বাধীনতা ছিনিয়ে, ছাড়েনি তো এতটুকু জমি।
মিলিয়ে হাতে হাত, করেছে লড়াই চেপে দাঁতে দাঁত, যত মহাবীর সন্তান।
হঠিয়ে ইংলিশ রাজ, আনিয়ে স্বরাজ, দেশকে উপহার দিয়েছে সংবিধান।
সংবিধান যখন মাতৃগর্ভে, তখনও ছিলাম স্বদর্ভে, এই ভুমিতেই দন্ডায় মান।
আসে যখন সংবিধান, তখনও আমি বিরাজমান, টুটেনি মোর আত্মসম্মান।
মোর প্রার্থনার গেহে, তোরা ঢোকালি স্বদেহে, তোদের কাঙ্খিত ভগবানে।
মুই হনু দিশাহারা, সংবিধানই মোর সাহারা, তাই ফরিয়াদ করি সেইখানে।
সংবিধান আছে মোর, এই ছিল জোর, রক্ষা পাবে মোর ভূঁই।
চলছিল মামলা, রক্ষকের সামনেই হামলা, ভরে গেল আঁখি দুই।
নিলি করে জোর, ছিলনা ভূমি তোর, কারণ দেখালি আস্থা।
জোর ছিল তোর, চাপলি মোর উপর, সাথে নিয়ে সব ব্যাবস্থা।
ভরসা ছিল মিডিয়ার পরে, সেই পাল্টি মারে, বিচার আটকায় জাঁতাকলে।
শুধু করি হাঁস ফাঁস, আছে কি আর কিছু আশ, নাকি আটকাবে প্রটকলে।
অন্ধ বিশ্বাসের বলে, কলে ছলে কৌশলে, প্রচারে হয় প্রভাব বিস্তার।
শতাব্দীর প্রচেষ্টা, কাব্য চরিত্র পায় প্রতিষ্ঠা, ক্রীড়নক বনে সরকার।
চিন্তাধারা ধরে বক্ষে, সুদূর প্রশারি লক্ষে, ছড়াতে থাকে সাম্প্রোদায়ীক বিষবাস্পের।
ইতিহাস হয় বিকৃত, পাঠ্যসূচীও হয় পরিবর্তিত, কচি মগজে থাবা বিদ্বেষের।
শত বছরের সৌধ, শ্লোগানে হয় অবৈধ, অন্ধ আক্রোশে হয় ধুলিস্যাত।
মামলা যায় বিচারে, আসামি বুক চিতে ঘরে, ফরিয়াদী বনে বজ্জাত।
মামলা চলে যত, অন্ধ বিশ্বাসি ও বাড়ে তত, সংবিধানেরও বাড়ে সংকট।
বলেন ধর্মাবতার, হবেই এর বিচার, দেখা যাক আপসে কাটে কিনা জট।
জোটে বহু ধর্ম গুরু, কথা চালা চালি সুরু, সব প্রচেষ্টাই শেষে নিষ্ফলা।
ছাড়ি সংবিধান, ধর্মাবতার দিলেন বিধান, বিতর্কিত ভূমিকে করো ত্রিফলা।
যত কালো আছে বিদেশে, আসবে ফিরে দেশে, চটক ভাষনের ভোট।
বিকাশ গেলো থমকে, দেশকে দিয়ে চমকে, হঠাৎ রঙ বদলায় নোট।
মবলিনচিং এর নামে, যম দূত সম পথে নামে, গো-মাতার যত সন্তান।
গৌ-রক্ষার বাহানায়, কতশত প্রাণ যা্য়, তারা কি নয় ভারত মাতার সন্তান!
আঠারঘন্টা অত্যাচার, প্রশাসন নির্বিকার, শেষে অত্যাচারীতই হয় গ্রেপ্তার।
করে হাহাকার, নিপীড়িতের পরিবার, আদালতের কাছে চায় ন্যায় বিচার।
শূন্য মায়ের কোল, রমণীর সাদা আচল, কানুন আসে তিন তালাকের।
সন্তানের আহাজারি, মায়ের আঁখি বারী, রির্পোট প্রকাশ হৃদ-আক্রান্তের।
ছিল উদ্বেগে গোটা দেশ, কবে হবে শেষ, বিতর্কিত জন্মভূমি।
কয়েক দশক পরে, আবার-ও বখরা করে, জানালনা কে ভূস্বামী।
বিতর্ক ছিল ভূমির, মালিকানা কে জমির, কে-ই-বা দখলদার।
বিয়াল্লিশের বলে, রায় এল অতি কৌশলে, জয় হল অন্ধ আস্থার।
এ-জগতে হায়, বাদি বিচার না পায়, হয় সংখাধিক্যের কারিকুরি।
শাসকের ফরমান, গাইতে হবে জয়গান, জুরি সভায় হয় জারিজুরি।
ইতিহাস কয় , নাই কোনও ভয়, ইতিহাসের ও হয় ইতিহাস।
কি ছিল সত্য, হবেই উদ্ঘাটিত, রইবে না চেপে সে ইতিহাস।