কবিতার নাম পেলাম না।


।।মায়ের লড়াই ।।  


ও বাবু….
বাবু রে…. ফিরে আয়।
সদ্য প্রসূতি এক মা সমানে ডেকে যায়।
মায়ের সেই ডাক আর্তনাদের মত শোনায়।
গোঙানির মত আওয়াজ এক দরবেশ পথচারীর কানে যায়।
দরবেশ দেখেন….
চারিপাশে আবর্জনা ও মলত্যাগে পরিবেশ দুর্গন্ধময়।
নোংরাবস্তায় ছোট্ট এক শিশু ছাগীর বাঁটে মুখ দিয়ে দুধ পিতে চায়।
গুটি গুটি পায়ে নিকটে এসে বলেন — আহাঃ কর কি বাছা? শিশুকে শুধায়?
ক্রোধের দৃষ্টিতে দরবেশকে দেখে, সে পুনরায় দুধ পিতে মন দেয়।
ভাবেন দরবেশ ….
না-জানি মাতার কি হাল, ক্ষুধায় জ্বালায় শিশু যদি এমন ভাবে কাতরায়।
ছুটে যান গৃহে, চক্ষু তার ছনাবড়া, দেখেন --  
রক্তাক্ত মেঝেতে ফুট ফুটে এক নবজাতক নিয়ে পড়ে আছে ‘মা’ মৃত প্রায়।
হয়নি তার নাড়ি কাটা, অচৈতন্য অবস্থায় ডেকে যায় – বাবু-রে ফিরে আয়।
কত দিন অভুক্ত কে জানে, নড়া চড়ার শক্তি শেষ, নিশ্বাস চলছে কোনক্রমে, প্রচণ্ড জ্বর তাঁর গায় মায়।
তবু ঘোরের মধ্যেই ডেকে যায় – আয়- বাবু-রে ফিরে আয়।
লজ্জা ভুলে শুকনো কাপড়ে শিশুকে সাফ করে খাওয়ান মায়ের দুধ।
প্রতিবেশি ডেকে ‘মা’কেও পরিষ্কার করে খাওয়ান সেই ছাগীর দুধ।
একটু সুস্থ হতে জানলেন –
ছয় দিন অভুক্ত, চারদিনের জ্বরে অচৈতন্য অবস্থায় সন্তান প্রসব করেছেন।
এই গৃহ টুকুই তার সম্বল, আপন কেহ নাই, কাজের জন্য স্বামী ভিন রাজ্যে গিয়ে তালা-বন্দিতে আটকে পড়েছেন।
দরবেশ ‘মা’ সন্তানের চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে বেশ কিছুদিনের খাদ্যের ব্যবস্থা করে তবেই ফিরেছেন।