আলোকাভিসারী মহামানবের জন্মাবির্ভাবে,
ধূলিধুসর ভারতভূমি পেয়েছিল এক ত্রাতার স্বরূপ।
রবীন্দ্রনাথ — এ এক নাম নয়, এ এক অন্তর্লীন চেতনার অভিধান;
এ এক পরিপূর্ণতা যার ব্যঞ্জনায় ধ্বনিত হয় কাব্য, সংগীত, চিত্র ও দার্শনিক ধ্যানের সংহত ছন্দ।
তাঁর জন্মজয়ন্তী মানে নিছক স্মরণ নয়,
বরং এক অলৌকিক সুধাস্নানে অবগাহনের তিথি।
তাঁর কলমের প্রতিটি রেখায় নিহিত ছিল বর্ণিল বেদনা,
ছিল উচ্চারণে গীতিময় গাম্ভীর্য,
আর দর্শনে মানবতাবাদের সুধামন্ত্র।
তিনি ছিলেন বাঙালি আত্মার আরাধ্য, মহার্ঘ প্রতীক!
যার সৃষ্টিশীলতা ভেঙেছে প্রথার প্রাচীর,
রচনা করেছে নবজাগরণের নান্দনিক মানচিত্র।
সাহিত্যের গভীরতম কন্দরে তিনি প্রোথিত করেছেন ভাষার বিশুদ্ধতম বীজ;
জীবনবোধের গূঢ়তম গহনিকে রূপ দিয়েছেন ছন্দের সমবায়ে।
বিশ্বসভায় তিনি শুধু কাব্যদ্রষ্টা নন,
বরং এক সর্বব্যাপ্ত বোধপ্রবণতা,
যাঁর ভাবনাচিন্তায় বিরাজ করে চিরকালীন সমন্বয়ের অনিবার্য মন্ত্র।
তাঁর জন্মতিথিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য হয়ে ওঠে শব্দের পরম পূজা,
অন্তরাত্মা হয়ে ওঠে শ্রুতি-সঞ্জীবিত।
তিনি চিরন্তন—কালোত্তীর্ণ এক ভাষা,
যিনি জন্মেছেন বারবার নিঃশব্দতার সংলাপে।
তাঁর জন্ম নয়, যেন চিরন্তন সত্তার পুনরাবির্ভাব।
তাই শ্রদ্ধায় নত, অন্তরস্পর্শী অনুরণনে উচ্চারণ করি—
“হে শতবর্ষের শ্রেষ্ঠ আরাধ্য, তোমার আলোয়ই আমাদের সাহিত্য মুক্তি।”
========