আমি একজন দিন মজুর
দিন আনি দিন খাই
ঘরে বউ আছে, দুই সন্তানের বাবা আমি
মা, বাবা বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে
পরিবারের আমিই একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি
যখন যে কাজ পাই তাই করি
তা দিয়ে ছয় সদস্যের এই পরিবারের আহার জুটে
আজ একমাস হলো কাজ নেই
কেউ কাজে ডাকে না
দেশে নাকি একটা ভাইরাস এসেছে?


.......কেন? সরকার তো আপনাদের সাহায্য করছে?


কি যে বলেন আপা;
ওগুলো কি আমাদের জন্য!
ওগুলো তো আসে বড় বড় রাঘব বোয়ালদের জন্য
ওদের পেটেই সব যায়
ওসব কি আমাদের ভাগ্যে জুটে!


.......শুনলাম যে, ডিসি সাহেব সরকারী ত্রাণ থেকে সকল অভাবগ্রস্তদের ঘরে ঘরে খাবার পাঠাচ্ছেন?


শুনেছি,  উনি নাকি বলছেন হোয়াটস এ্যাপে চাইলে খাবার পাঠাবেন;
হোয়াটস এ্যাপ কি আপা, ওইটা নাকি মোবাইলে থাকে?
খাইতেই পাই না, আবার মোবাইল!
ওইগুলো তো বড় লোকেদের জিনিস, আমরা কোথায় পাবো!
কত কষ্ট করে পেটে ভাত জুটাতে হয়!


মাষ্টার বাড়ির ছেলেটা খুব ভালো
সে নাকি কী করছে, হ্যাঁ মনে পড়েছে সংগঠন
অনেক মানুষকে সাহায্য করছে;
ওখান থেকে মাঝে মাঝে একটু চাল ডাল দিয়ে যায়
তা দিয়েই দিনে একবার কোনরকমে খেয়ে আছি
কোনদিন সারাদিনে একবারও খাবার জুটে না!
তবুও এই সাহায্যটুকু না পেলে মাসুম বাচ্চা গুলো আর বুড়া মা বাবারে বাঁচাতে পারতাম না!


এই ভাইরাস কবে যাবে আপা?
মানুষ ভাইরাসকে এতো ভয় পায়
ক্ষুধার জ্বালা কী জিনিস যদি বুঝতো!
আমাদের ভাইরাসের ভয় নাই আপা
আমাদের ভয় ক্ষুধার!


২২/০৪/২০২০ ইং