প্রথম দৈত্য বললো,
'চাওয়ার শেষ নেই।
এই চাওয়ার চক্করে কত সোনার তরী ডুবেছে অজানায়।
পাওয়ার সন্তুষ্টি চোরাবালির মতো অস্তিত্বহীন।
নারী পুরুষের মিলন
চাওয়া পাওয়ার মতোই সংজ্ঞাহীন।
ঠাঁই নেই। ভয় আছে তলিয়ে যাওয়ার'।


দ্বিতীয় দৈত্য বললো,
'আগুন লাগে মনে।
সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ঘরে,
ঘর থেকে গ্রামে।
সৃষ্টির ভিড়েই ধ্বংস নেমে আসে।
যার মনে দমকল বাহিনীর বাস,
সে অজেয়'।


তৃতীয় দৈত্য বললো,
'পেট ভরা, তবুও আরো খাবো।
গরুর চারটে পাকস্থলী, মানুষের একটাই,
তবুও গরুর মতো খিদে।
চাই, আরো চাই।
লিভারে জমতে থাকে চর্বি।
বাড়ে পেট, বাড়ে রোগ'।


চতুর্থ দৈত্য বললো,
'আমি ঠিক, তুমি ভুল।
পতনের আগে মানুষের অভিব্যক্তি।
অন্ধ দেখতে পায় না,
তাই পথ চলতে গেলে হোঁচট খায়।
জ্ঞানী খালি পায়ে চলে,
অজ্ঞানীর পা সোনায় ঢাকা'।


পঞ্চম দৈত্য বললো,
'ভালোলাগার বস্তুর প্রতি দারুণ টান।
জন্ম নেয় অন্যায় আসক্তি।
অন্ধ স্নেহ, অন্ধ মমতা, অন্ধ আঁকড়ে রাখা।
আমার বাড়ি, আমার গাড়ি, আমার স্ত্রী, আমার টাকা।
সংসারের প্রতি অযৌক্তিক মায়া,
নিজের জীবনযাপনের প্রতিও'।


ষষ্ঠ দৈত্য বললো,
'ওর আছে আমার নেই।
ওর হচ্ছে আমার হচ্ছে না।
ওর কেন আছে? ওর কেন হচ্ছে?
তুলনা থেকে জন্মায় হতাশা, হতাশা জন্ম দেয় ঘৃণার।
নিজেকে নিয়ে যে সন্তুষ্ট, সে পরম যোগী।
প্রতিযোগিতার ভিড়ে প্রতিভা হারায়'।


আলাদিন বললো,
'আমার প্রদীপের ভিতরে যে দৈত্য আছে,
সে এই ছয় দৈত্যকে করেছে জয়।
তাই আমি মুক্ত জীবন।
আমার দৈত্যের নাম আত্মোপলব্ধি।
এই প্রদীপের নাম আত্মবোধ।
আমার নতুন নাম আত্মপরিচয়'।