'কাড়াকাড়ি'
(কবিতা )


আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে,
বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম-
তাঁর কবিতায় বলেছেন...
'যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটির গ্ৰাস'
তিনি মনেপ্রাণে চান, তাদের 'সর্বনাশ' !


কবিকে সহস্র প্রণাম জানিয়ে,
'কাড়াকাড়ি'-র হাল এখন গেছে স্তরে--
জানাতে চাইছি তাঁকে, কিছুটা​ বিস্তারে।


বর্তমান ভারতবর্ষে--
জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় চারগুণ !
ছাড়িয়ে গেছে একশ ত্রিশ কোটি !
চারদিকে শুধু মানুষ, কাঁড়ি-কাঁড়ি
লেগেই আছে সবর্ত্র--
ঝগড়াঝাঁটি, কাটাকাটি, কাড়াকাড়ি।


এখন বোধহয়--
মানুষ শুধু নিজের জন্যই জন্মায়,
লাগুক-না-লাগুক ! যা পারে কেড়ে নেয়।
দশের কল্যাণে সত্যিকারের আত্মত্যাগ !
সে সব ইতিহাস ! গল্পের মত শোনায়।


এখন নিজের স্বার্থে......
মানুষ মানুষকে, কৌশলী এনে পটায় !
মানুষ পণ্য ! তাকে নিয়ে হয় কাড়াকাড়ি !
কাজের সময় সে কাজী....
কাজে-শেষে অবাঞ্চিত, যায় গড়াগড়ি।


প্রায় প্রতি বছর হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়
ভেঙ্গে যায় গরীবের কাঁচা ঘরবাড়ি,
চাষবাসের-ও ক্ষতি হয় বিপুল...
ত্রাণ নিয়েও চলে দূর্নীতি, কাড়াকাড়ি !


হালে, শুধু মানুষই নিজের স্বার্থে--
নিচ্ছে কেড়ে প্রকৃতির সবুজের-সারি,
হাতেনাতে পাচ্ছে-ও চরমতম শাস্তি,
মরছে লাখে লাখে !
মারছে, প্রাণঘাতী 'করোনা অতিমারি'।


প্রতিষেধক টিকা এখন যাচ্ছে পাওয়া,
কিন্তু যোগান অপ্রতুল, হচ্ছে কাড়াকাড়ি,
বলতে লজ্জা হয়...
ধরা পড়েছে, ভেজাল টিকার কারবারি !


দুঃখে, বলছি তোমায় সরাসরি...
হিংসার বলি সাধারণ মানুষের--
টাটকা লাশের অধিকার নিয়ে--
বহু দল করে মারামারি, কাড়াকাড়ি !


নীতির রাজা নেই আর রাজনীতি,
শুধু ক্ষমতা দখলের মোহে--
নেতারা গদি নিয়ে করেন কাড়াকাড়ি,
ভালো মন্দের নেই পরোয়া !
পরিণামে, 'দশের-ভালো' দেয় হামাগুড়ি !


মনেহয়, মানুষ খুঁড়ছে তার কবর নিজে,
বিধাতাও বিরূপ মানুষের পরিত্রাণে !
প্রার্থনা করি, আসুন অবিলম্বে--
কোন মহাপ্রাণ, সবার সার্বিক কল্যাণে।
**********************
সুব্রত ভৌমিক ১৮০৯২০২১ কোল-৭৫
**********************