.        #  'বিদ্যাসাগর জন্মজয়ন্তী-২০২২' #
                             (কবিতা)


.            এ আমার "গঙ্গা জলে গঙ্গা পূজা"
তাঁর কর্মকান্ডে বিস্মিত হয়ে, তাঁকেই জানাই শ্রদ্ধা।
ওনার অশেষ গুণাবলীর আলোচনা নিষ্প্রয়োজন
কারন, প্রায় সব-ই জানেন আপমর জনসাধারণ।


অসুস্থ হয়ে অন্তিম শয্যায়, থাকতেন খুবই বিষন্ন
তবে দেহ-ক্লেশের জন্য নয়! মনে মনে ভেবে উদ্বিগ্ন-
শিক্ষকের চাকরি-মেয়াদ শেষে কে জোগবে অন্ন?
পারেনি আনতে যে অবসর ভাতা ! তাই অবসন্ন।  
ভাবা যায় ! কি অসাধারণ দরদ ছিল সবার জন্য।


ডাকাত নিয়ে গেল তাঁর সর্বস্ব লুটে, ভীত সব প্রাণ!
পরে ক্ষমা চেয়ে ফিরিয়ে দেয় তারা, লুটের সব মাল
এই ঘটনা প্রমাণ করে, সবার তিনি ছিলেন ভগবান।

'ইংরেজ প্রিন্সিপাল', কলেজে নিজেকে ভেবে মস্ত !
টেবিলে পা তুলে দেখিয়ে ছিলেন তাঁকে অসৌজন্য
বিদ্যাসাগর তাকেও একই ভাবে, করেছিলেন জব্দ।
ইংরেজদের বুঝিয়ে ছিলেন...'তেনারা' বড়ই অভদ্র!


ছোট্ট মাল নিয়ে স্টেশনে, গন্যমান্য ব্যক্তি সমস্যায়!
কুলি সেজে বিদ্যাসাগর, মাল পৌঁছে দিলেন টাঙ্গায়,
পরিচয় দিয়ে শিক্ষা দিলেন ! কোন কাজই ছোট নয়।


মায়ের ডাকে দিতে সাড়া, করলেন কাজ ভয়ংকর!
ভাবা যায় না ! তাঁর সেই অসীম সাহসিকতার কথা !
সাঁতরে পার হয়েছিলেন! ভরা বর্ষায় নদী দামোদর।
তাঁর মাতৃভক্তি ! এখন অব্দি বাঙালি জাতির গুমর।


পরিধান ছিল...পায়ে চটি-গায়ে চাদর-পরনে ধুতি
যা ছিল...সমসাময়িক দরিদ্র ভারতবাসীর প্রতীক
পরেন নি অন্য পোষাক ! এমনি ছিল স্বদেশ প্রীতি।


ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন ঈশ্বরেই সন্দিহান ! বলে সমীক্ষা
জীবন জুড়ে কর্মই ছিল তাঁর ধর্ম...আরাধ্য দেবতা,
প্রতিধাপে দুর্ভোগে, ভগবান নিয়েছেন তাঁর পরীক্ষা।
বিধবা বিবাহ আইন পাশ ! প্রায় তাঁর একক প্রচেষ্টা।


পিতার মত দৃঢ়তা ও মায়ের মত ছিল কোমল হৃদয়,
নিজের সুখ সম্বন্ধে ! ছিলেন সম্পূর্ণ ভাবেই উদাসীন
দান করেছেন সর্বস্ব...নারী কল্যাণ ও জন শিক্ষায়।
অবাক লাগে ভাবতে, কি করে মানুষ এত মহৎ হয়!

শিক্ষা মূলক বহু ঘটনা ছড়িয়ে আছে তাঁর জীবনে...
আজ, ছাব্বিশে সেপ্টেম্বর, দু'হাজার বাইশ খ্রিষ্টাব্দ
জন্মদিনে সহস্র কোটি প্রনাম জানাই তাঁর শ্রীচরণে।


দুর্নীতিতে চুড়ান্ত অবক্ষয়ের শিকার বর্তমান সমাজ
কর্মবীর-নির্ভিক-সৎ মানুষ !...প্রায় নেই বল্লেই চলে
পরিত্রাণে ফিরুন হে মহাপ্রাণ ! প্রার্থনা রইল আজ।
********************************
সুব্রত ভৌমিক  ২৬-০৯-২০২২ কোলকাতা -৭০০০৭৫
********************************