যুগ ফেরিয়ে গেল,
আমি তোমায় দেখিনা!
বাড়ির সামনের পুকুরে আর সাঁতার কাটা হয়না।
হয়না শোনা মায়ের বকুনি!!
অতক্ষণ ধরে সাঁতার কাটার জন্যি।


কতদিন শোনা হয়না
ভোরের পাখপাখালির ডাক,
ভর দুপুরে কোন অদ্ভুদ কন্ঠস্বরে
ফেরিওয়ালার হাক।


কতদিন  হয়না !
সকালের ফুল তোলা,
কিংবা আম কুড়ানো বা তাল কুড়ানো
যায় কি সে সব ভোলা?


বৃষ্টি ভেজা পিচ্ছিল মেঠো পথ ধরে
হয়না স্কুলে বা বাজারে যাওয়া।
কতদিন হলো!! গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে
আমের ছায়ায় বসে, গায়ে আর লাগে না হাওয়া।


সেই পরিচিত খেলার মাঠ,
স্কুল ফিরে,  খেয়ে না খেয়ে
দিতাম  সে কি দৌঁড়!
তা নিয়ে মায়ের আপত্তি ছিল ঘোর।


পিছন থেকে ডেকে মা বলে,
আর একটু পরে যাস, একটু জিরো
শোনার সময় কোথা?
যদি দলে জায়গা না মেলে!!


কখন ও ফুটবল, কখন ও বা ক্রিকেট
কখনো আবার দলে জায়গা না পেলে
ঠাঁই  দাঁড়িয়ে দর্শক
অথবা স্কোরার বা আম্পায়ার।


চৈত্রের পড়ন্ত বিকালে
সেই বেল গাছের তলায়
সবার কথার ফুলঝুরি,  
আড্ডার ছলে সূর্য  যেত পাঠে।
সন্ধ্যায় হারিক্যানের আলোয় পড়তে বসা খাটে।


পড়ার ফাঁকে ফাঁকি দিয়ে মাকে
দুই ভাইয়ে মিলে করতাম কুস্তি কুস্তি খেলা।
পড়া শেষে ধরতাম বায়না,
মাগো, দেখব আলিফ লায়লা।


সব কিছুতে ছিল নিরেট আনন্দ,
ছিল খুনসুটি আর ভালবাসার অকৃত্রিম বন্ধন।
এখন ইট পাথরের প্রানহীণ শহরে,
বেঁচে আছি ঠিক, তবে নেই সেই প্রানের স্পন্দন।


শুনেছি, মেঠো পথের জায়গায় এখন পিস ঢালা সড়ক।
খেলার মাঠ নাকি নেই আগের মত,
বসতি গেড়েছে অনেকে।
হারিক্যানের আলোকে কেড়ে নিয়েছে, বৈদ্যুতিক সংযোগ।


তবুও মিস করি, আমার সেই অতিপ্রিয় গাঁ।
কতদিন দেখিনা!  কত দিন দেখা হয় না।।