কেউ করে শখে তাহা
অথবা সময় কাটানোর পরে,
কেউ বহে মরে
জীবন চালানোর তরে।
হয় যদি তাহা গ্রাম
লাগে না কোনো নাম,
কিন্তু যদি হয় শহর
তবে প্রশ্ন আছে অহরোহর।


মোর জীবনের কথা যদি ধরি
চিন্তা করে মরি ,
মনে মনে ভেবেছিলাম
করব পড়ালিখা শহরে,
চলবো টিউশনি করে ।


এসে দেখি হায়
একি  শহর না অন্য কিছু তাই,
বাড়িতে ছিলাম যখন
কত না ভেবেছিলাম তখন,
অভাব হয় না কোন টিউশনির
পড়ার সুযোগ হয় কত ছাত্রছাত্রীর ।


এসে দেখি তবে
যেতায় বলি, বলে শুধু হবে
যেখানেই জিজ্ঞাসা করি ,
তারা বলে আমায় , আমি কোন ক্লাসে পড়ি ?
বলি যখন আমি ইন্টারে পড়ি
তারা বলে তড়িগড়ি
কোন কলেজে পড়ি ?
কোন ডিভিশনে পাস করেছে?
ইত্যাদি আরো কত প্রশ্ন শুনে মরি ।
তাদের মনে যদি লাগে
আশ্বাস দেয় তবে, ধৈর্য্য ধরো হবে
ভালো যদি না লাগে , ভাগে আগে আগে ।
তারপর ও যে ধরেছি কত মানুষের হাত পা
আশ্বাসের পথ টি  বেয়ে চলতে চলতে
জুতোর তলায় পড়েছে কত না ঘা!


বিশ্বাস করিতাম সৃষ্টির স্রষ্টাকে
বিশ্বাস করিতাম সকল প্রবাদ ,
তাইতো মোর ধৈর্য্যের সীমা ছিল অবাধ ।


দিন গড়াতে থাকে
শুরু হয়ে গিয়েছে ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস
মাসির বাসায় থেকে চলতো মোর লেখাপড়া
আর চিন্তা করিতাম কিভাবে হবে মোর জীবন গড়া
স্রষ্টা মোর সহায় হয়েছিল সেই দিন,
সকল চিন্তার অবসান ঘটিয়ে
এলো মোর কাছে সুদিন ।


হটাৎ পেয়ে গেলাম একটা টিউশনি
মনে হলো পেলাম যেন আগুনের পরশ মনি
আড়াইশো টাকা বেতন ,
বলিনি সেদিন কিছু ,
হাঁটিনি কোনো ভাবে পিছু ।


২০০২ এর জানুয়ারি পার হল , ফেব্রুয়ারি এলো
অমনি পেয়ে গেলাম আর একটি ।
অতঃপর ভাবিতে লাগিলাম
কিভাবে চলবো একা, হবো সাবলম্বী
স্রষ্টার আশীর্বাদ যাবে কি মোর ধোঁকা!
না ঘটে নি তাহা, কি মজাই না হয়েছিল তার পর আহা
মনে পরে আমার সে দিনের কথা
সেন্ডেলের ভাঙা তলা নিয়ে গিয়েছিলম টিউশনিতে
লজ্জায় মরিতাম না জানি দেখে পেলে কেউ ,
বিধির আশীর্বাদ সেদিন করিতে পারেনি কেহ হেউ ।


হঠাৎ মাসিত ভাইয়ের হলো বিয়ে
থাকিতে পারিব না আমি তাদের বাসায় গিয়ে ,
কি আর হবে কপালে লেখা ছিল যাহা ,
ভাবিলাম  ঘটবে তো তাহা,
তারপর একদিন বসন্ত গায়ে
কালুর ঘাট থেকে এসে  আগ্রাবাদ দেখিলাম বাসা
তারই মাঝে আমি আছি এখন ও হয়ে কোন ঠাসা ।


কিছুদিন আগে মাসিত ভাই মোর
চলিয়া গিয়েছে বিদেশ ,
যাওয়ার আগে , মাসির বাসায়
সাময়িক ভাবে খাওয়া দাওয়া ও হলো শেষ ।


সময়ের প্রয়োজনে নিজেকে তুলে নিতে হলো রান্না
আর পেঁয়াজ কাটতে গেলে আসে চোখে কান্না ।
তবুও আজ আমি আছি কত সুখে ,
একরাশ হাসি আছে মোর মুখে ।


মাঝে মাঝে চিন্তার কুটরে জমা থাকে যতসব অতীত ব্যথা
ভবিষত্যে পাবো কি নিরবিচ্ছিন্ন সুখের দেখা ?
আজ আর তেমন ভাবিনা নিজের জীবনে কে নিয়ে
শুধু ভাবি মা বাবার মুখে সুখের হাসি ফুটাতে পারবো কবে ?
যদি পারি তাহা হবো ধন্য ,
আর এমনি ভাবে হবে মোর জীবন টা কত যে অনন্য ।
--------------------------------------------------------


রচনা কাল: ২৯শে জুলাই ২০০৩


আমার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা । তখন আমি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজে ইন্টারমেডিয়েটে  পড়ি । সে সময়ে পড়াশুনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য আমার যে কষ্টটুকু করতে হয়েছিল তাই ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলাম । আজ সংরক্ষণের জন্য তুলে রাখলাম এখানে ।