ইচ্ছে করে লিখতে অনেক কিছু;
ভয় ছাড়ে না, ধায় সে পিছু পিছু।
অদৃষ্টের বড়োই পরিহাস;
হবুচন্দ্র রাজার দেশে বাস।
গবুচন্দ্র মন্ত্রী সবসময়
আমার উপর খরগহস্ত রয়।
লিখতে বলে রাজার গুণগান;
পাই না খুঁজে বিন্দু পরিমাণ।
বিন্দু পেলেও সিন্ধু করা যায়;
খাতাকলম ঘরে রাখাই দায়।


মন্দভালো যায় না কিছুই বলা;
ধরবে টিপে আমার চিকন গলা।
আমজনতা সক্কলেরই জানা;
রাজার আছে মস্ত কয়েদখানা।
আনবে ধরে, পুরবে সেথায় ঠিক;
মারবে জোরে পাছায় লম্বা কিক।
গরাদখানায় সকাল দুপুর রাতে;
গলাধাক্কা মিলবে খানার সাথে।
ভাগ্য যদি একটু খারাপ হয়;
শূলের উপর চড়াবে নিশ্চয়।


সেই ভয়েতে ভয়ে ভয়েই থাকি;
জন্মদাতা পিতাকে রোজ ডাকি।
পরপারে চলে গেছেন আগেই;
তাঁর বুদ্ধি তবু কাজে লাগেই।
বাবা বলেন,' লেখার কি দরকার;
লেখার জন্যে আছেই তো 'সরকার'।
চুপ করে থাক্ হাবাগোবা সেজে;
রাখিস নে পা কেউটে সাপের লেজে।'
বাবার কথা ভুলি না কখখনো;
গোয়ালঘরে দেই না আমি ধুনো।


রচনাকাল: ঢাকা, ২২ নভেম্বর ২০২১।


পাদটীকা : আগের দিনে যাঁরা একআধটু লেখাপড়া জানতেন, তাঁদেরকে 'সরকার' বলা হতো। তাঁরা বিভিন্ন অফিস আদালতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং ব্যক্তিগতভাবে  হিসাবপত্র, চিঠিপত্র বা দলিলপত্র লেখালেখির কাজ করতেন। তাঁরা নিজেদের নামের শেষে উপাধি হিসেবে 'সরকার' লিখতেন।