অদ্ভুত সময় এখন! প্রশ্ন উঠেছে আমি দেশপ্রেমিক কিনা।
একপক্ষ আমাকে সন্দেহ করে -প্রকাশ্যে উচ্চারিত উচ্চকিত ঘৃণা।
যা খুশি তাই করছে বলছে চলছে। কখনো বা সমালোচনামূখর হই।
জনগণের দুঃখ দূর্দশা হতাশা ভালোবাসা নিয়ে কথা কই।


প্রশ্ন উঠে ব্যক্তিচিন্তার স্বাধীনতা নিয়ে -স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে।
বাংলার দামাল ছেলেরা মেয়েরা যা কিছু ছিলো লাঠিসোটা অথবা টোটা-বল্লম দিয়ে
আঘাত হেনেছিলো সশস্ত্র সংগ্রামে। অধিকার বঞ্চিত এদেশের
ক্ষুব্ধ মানুষ মেরেছিলো বিশ্বের অন্যতম বাহিনীর কুখ্যাত সৈনিকদের।
কোন্ আত্মবিশ্বাসে? দেশকে স্বাধীন করার অদম্য তাগিদে।
হায়েনার দলে নাম লিখিয়েছিলো অল্প কিছু বেপথু তাবেদার। বুকে বিঁধে
আজও সে অত্যাচার নিপীড়নের বিষযুক্ত শেল তীরের মতো।
শহীদ জননী-জায়া-সন্তানের কী যন্ত্রণায় কেটেছে জীবন! কতো
স্মৃতি জাতির সম্মুখে কড়া নাড়ে। উন্নয়নের দোহাই কখনো খাটে না
কোনো জাতির স্বাধীন সত্তার উন্নত শির নীচু করে। মানুষ হাঁটে না
মনুষ্যত্বহীন জীবন ধারণায়। বুক চিতে আত্ম-অধিকার
পেয়ে যেতে চায় বীর জাতির সুযোগ্য সন্তান। নির্বিকার
থাকার নেই কোনোই বাসনা। নৈতিক মূল্যবোধ-সংষ্কৃতি-ধর্ম
কখনো ছাড়ে না। প্রতিকুল পরিবেশেও করে যেতে চায় সুকর্ম।
আজও বিষবাষ্প ছড়াইছে ফণা তুলে একাত্তুরের নির্মম ঘাতক।
কে তাদের সামলাবে? ভোগবাদে মত্ত স্বাধীনতার চেতনাবাহক।


কী আশ্চর্য জটিল সময়ে জন্ম আমার পরাধীন বাংলাতে!
কৈশোরে মিছিল করেছি। যুদ্ধ দেখেছি। ভেঙ্গে পড়েনি জাতি নির্মম হামলাতে।
মৃত্যুঞ্জয়ী এ জাতির উত্থানে আবেগী সময় মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতার সশস্ত্র সংগ্রাম।
ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে স্নাত বাংলাদেশ -সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের অপর নাম।
সেই দেশ আজও কেন বিপন্ন রবে? সমাজে আত্মসূদ্ধির বিপ্লব হলো না!
রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে থাকা ঘূণেপোকা-সুকোমল বৃতির পুষ্প রলো না।
লোভ-লালসায়-জিঘাংসায় কেন জর্জরিত হবে আমার স্বদেশ?
দেশপ্রেম কেন আজও প্রশ্নবিদ্ধ-বিভক্ত সমাজ? দুঃখ অশেষ।


নেই কি কোনো প্রতিকার! কোটি কোটি মানুষের নির্লোভ অঙ্গীকার
কেন নেই? প্রয়োজন নির্জলা দেশপ্রেম-আত্মত্যাগ সত্যিকার।
সেদিনের অপেক্ষায় আছি -সূর্যসন্তান ভূমিষ্ঠ
হবে প্রতি পরিবারে।
দূষিত রক্ত- নীল রক্ত সমাজদেহ হতে দূর হয়ে যাবে একেবারে।


রচনাকাল: ঢাকা, ০২ জুন ২০১৮