সেদিন কি অমাবস্যার রাত ছিলো;
নাকি পূর্ণিমা চাঁদ ছিলো আকাশে !
রাহুকবলিত ছিলো বাংলা মায়ের চাঁদমুখখানি;
নির্যাতনে নিষ্পেষণে ছিন্নবসনা মা আমার!
চৈত্রের খরদাহে বিবর্ণ ছিলো বাংলার প্রকৃতি;
মাঝরাতে নেমে এলো কালবৈশাখী প্রচন্ড বেগে।
তছনছ হয়ে গেলো গাছপালা, ফুলের বাগান;
লুটিয়ে পড়লো লাল গোলাপের কুঁড়ি,
হাসনাহেনার ডাল পড়লো ভেঙে;
মুখ থুবড়ে মাটিতে লুটালো বাগানবিলাসের ঝাড়।
আম-কাঁঠালের গাছ থেকে ঝরে গেলো মুকুল আর মুঁচি।
উপড়ে পড়লো তিন রাস্তার মোড়ে বিশালদেহী বটগাছ সমূলে।
নাভিশ্বাস বাঙালির।
লাশ হলো শিশু, কিশোর, আবালবৃদ্ধবনিতা।


ভনিতা আর ছলাকলার শেষে হায়েনারা বাঙালির রক্তে ভাসালো রাজপথ, ফুটপাত, গলিপথ
আর এবড়োথেবড়ো গাঁয়ের মেঠোপথ মাঝরাতে অতর্কিতে।
ঘরে, বাইরে, বাঁশবাগানে, ঝোপে, ঝাড়ে, নদীর ধারে, খালের পাড়ে
বাংলামায়ের অদম্য সন্তানেরা পড়ে রইলো লাশ হয়ে আকস্মিক গুপ্ত আক্রমণে।
এতো রক্তের স্রোত কেউ দেখেনি আগে;
পাষন্ডেরা এতো নির্মম হতে পারে!
ভীরু কাপুরুষের দল।


অগ্নিগর্ভা বাংলা মায়ের দামাল ছেলেমেয়েরা প্রতিরোধে গর্জে  উঠেছিলো বাঘের নিনাদে।
নেতার ঘোষণা,' এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম' বাঙালির শোণিতে জ্বালালো আগুন।
নেমে এলো যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে নেতার নির্দেশে।
সেই কালো রাতে এমনি করেই শুরু হলো বাংলা মায়ের অশ্রু মুছানোর যুদ্ধ।


রচনাকাল: ঢাকা, ২৪ মার্চ ২০১৯