শহীদ মিনারের পাশে দাঁড়িয়ে আছো তুমি।
পরনে কালো সেলোয়ার, কালো কামিজ।
কালো ওড়না বুকে জড়ানো।
অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছো কি শুধু মিনারের স্থাপত্য!
ইট বালি সিমেন্ট আর রডের তৈরি অপূর্ব সুন্দর একটি স্মৃতিস্তম্ভই কি শুধু তোমার সামনে !
ভাবছো কিছু?
দেখতে কি পাও?


তোমার বয়সী অসংখ্য তরুণ-তরুণী লম্বা মিছিল নিয়ে এগিয়ে চলেছে  সামনের দিকে।
মুষ্ঠিবদ্ধ দুই হাত নেড়ে মাথা উঁচু করে শ্লোগান তুলছে,' রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।'
হাতে প্লেকার্ড,' মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা ।'
মায়ের নাড়ি ছেড়া ধন মায়ের মুখের ভাষার সম্মান রক্ষা করতে রাস্তায় নেমেছে।
সামনে হার্মাদের বন্দুকের নল তাক করা বুক বরাবর।
গুলির শব্দে থেমে থাকেনি তারা।
মনোবল বেড়ে গেছে বহুগুণে।
বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলেছে,' রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।'
মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজে ছত্রভঙ্গ হয়নি তারা।
বুক চেতিয়ে এগিয়ে গেছে।
ঝাঁজরা হয়ে গেছে বুক।
ফিনকি দিয়ে বেরিয়েছে লাল রক্ত।
ভেসে গেছে পিচঢালা কালো পথ।
রাস্তায় ঢলে পড়েছে রফিক, সালাম, বরকত;
আরও নাম জানা অজানা বাংলামায়ের দামাল ছেলেরা।
মার বুক খালি করে কোথায় হারালো তারা?


তোমার চোখের সামনে এসব ছবি কি ছায়া ফেলে?
তাদের রক্তের ভিত্তিমূলে দাঁড়িয়ে আজকের বাংলাদেশ।
স্বাধীন বাংলাদেশে নিঃশ্বাস নিচ্ছো তুমি।
কথা বলছো বাংলায়;
লিখতে পারছো মায়ের ভাষায়, বাংলা ভাষায়।
শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দেওয়াই শেষ কথা নয়।
প্রভাতফেরি একদিনের জন্য নয় শুধু।
মর্মে মর্মে উপলব্ধি করো শহীদের আত্মত্যাগ।
সবাইকে নিয়ে ভাবো।
কর্মে হোক প্রকাশ।


রচনাকাল: ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯