সঘন আষাঢ়ের মুখরিত সন্ধ্যায় নেমেছে নোঙ্গর তার
শত কামনার, কখন আসবে নিশ্চল নিশুতি রাতি?
রিমঝিম ছন্দধারা, কদম্ব শাঁখের সোনালী মুক্তাদানা
আর কলমি লতার সাথে মায়াবী সাপের আলিঙ্গন,
শিহরন এনেছে তার সলাজ চাহনীর মনোতপোবনে।


জলনূপুরে তা ধিন তালে নেচে চলা ঐ চির চেনা নদী।
থৈ থৈ বিল, আড়ষ্ট পদ্মের চুমু খাওয়া জল,
পানকৌড়ির ডুবসাতার, জুবুথুবু কাকের জড়াজড়ি,
ঝড় তোলে দিয়েছে তার শুভ্র পাজরের ঠিক মাঝখানটায়।
মহাআঁধারের সিড়ি বেয়ে নেমে আসা নিঝুমতার অপেক্ষা।


টুপটুপ ঝিমঝিম, মধু মিলনের সুরেলা লহরি খেলা।
শাপলার নোলক নাকে, জলবতী ঝিলের ইঙ্গিতপূর্ণ চাহনী।
ওদিকে বাঁশঝাড়ের তলে কোলা ব্যাঙের একটানা পালা গান
যেনো প্রেমাতুর রাগিণীর এক বিমূর্ত প্রকাশ।
রাতের গাঢ়তা বাড়ার অন্তহীন ইচ্ছা তার হৃদয় জুড়ে।


অবশেষে ঘনঘোর কৃষ্ণ আলোয় পূর্ণতা পেল তার আকাশ।
চরম বরষা এলো তার অচিরল বুকে।
কে যেন কানে কানে বলে গেলো, ‘হবে’।
লোমস ছুঁয়া, তপ্ত শ্বাসের ওমে রচিত হলো সপ্তস্বর্গ বাসর।
আপন বর্ষায় ভিজলো সে খুব, তৃপ্ত বর্ষণের স্নাতধারায়।
(বরষার আয়োজন)