▪ ফরাসি সনেট/ফ্রেঞ্চ (French Sonnet) সনেটঃ-


ইতালিয় রেনেসাঁস আল্পস পেড়িয়ে ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ফ্রান্স, জার্মানি, ইংল্যান্ড, এবং স্পেনে প্রসারিত হয়। ইতালির পরে হলেও ফ্রান্সে রেনেসাঁস এসেছিল ইংল্যান্ডের আগে।


ফরাসী ভাষায় প্রথম সনেট রচনা করেন ক্লেমেন্ট ম্যারট (১৪৯৬-১৫৪৪)।
তিনি পেত্রার্কের ৬টি সনেট অনুবাদ করেন। তাঁর দুই অনুবর্তী Pierre de Ronsard (১৫২৪-১৫৮৫) এবং Joachim Du Bellay (১৫২৫-১৫৬০) ইতালীয় রীতির ভিত্তিতে ফরাসী ভাষায় সনেট রচনার নতুন ধারার প্রবর্তন করেন।
ফরাসী সনেট এর স্তবক সংখ্যা থাকে শেক্সপীয়রীয় রীতির মতোই চারটি তবে এখানে চরন এর তারতম্য আছে।


ক্লেমেন্ট ম্যারটের অনুসারী কবিদের মধ্যে মেলিন ডি সেন্ট গেলাস (১৪৯০-১৫৫৮) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার মাধ্যমেই ফ্রান্সে সনেট জনপ্রিয়তা পায়। কারো কারো মতে তার "Vovant ces monts de veue einoi lointaine' সনেটটি ফরাসি ভাষায় লেখা প্রথম সনেট।


#ফরাসি রীতির সনেটের বৈশিষ্ট্যঃ-


★ ফরাসি রীতির সনেটে প্রথমে স্তবকে দুইটি চতুষ্ক এরপর একটি সমিল দ্বিপদীকা এবং পরে একটি চতুষ্ক লক্ষ্য করা যায় অথবা কখনো শেষে দুইটি ত্রিপদীকাও লক্ষ্য করা যায়।


★ চারটি স্তবক যথাক্রমে ৪+৪+২+৪ অথবা ৪+৪+৩+৩ চরন নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে আর ভাবের অবতারনা ও পরিণতির বিষয়ে এখানে অতটা দৃঢ় ব্যাকরণের নজর পাওয়া যায় না।


★ এ সনেটে দ্বিতীয় স্তবকে যাওয়ার সময় অর্থাৎ ৯ম ও ১০ম পঙক্তিতে কবিতার মেজাজ বদল(ভোল্টা) ঘটে।


★ ফরাসি রীতির সনেটে অষ্টকের মিল বিন্যাস নিম্মরূপঃ-
•১ম, ৪র্থ, ৫ম ও ৮ম পঙক্তিতে ২য়, ৩য়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম পঙ্‌ক্তিতে মিল থাকে।


★ ফরাসি রীতির সনেটের অন্ত্যমিল নিম্নরূপঃ


• কখখক : কখখক :: গগ : ঘঙঘঙ/ABBA : ABBA :: CC : DEDE
অথবা
• কখখক : কখখক :: গগ : ঘঙঙঘ/ABBA : ABBA :: CC : DEED
→এছাড়াও নিম্নরূপ অন্ত্যমিলও দেখা যায়ঃ
• কখখক : কখখক :: গগ: ঘগগঘ/ABBA : ABBA :: CC : DCCD
• কখখক : কখখক :: গঘগ : ঘগঘ/ABBA : ABBA :: CDC : DCD


#একটি ফরাসি রীতির সনেটের উদাহরণঃ-


★1.
• {Tell Me of Your Anger in Whispers}


Should you be moved at times to speak in anger, dear,   A
I only ask that first you test your words alone. B
Because if anger stems from blunders of my own  B
I'm sure you'll want to be assured your meaning's clear.  A
Remember words once thrown will travel like a spear  A
and meanings take on color weighed much by tone. B
So package words with giggles not with growl or groan  B
and then the thoughts that form those words might disappear.  A
Delay those words, re-think, and then reformulate.  C
and later will be your time to pontificate.  C


I stumble much to often; you are usually right.  D
Is it really essential now that blame be found,   E
or can our words proceed toward a common ground?  E
My dear, use whispers closely to me late at night.  D


[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABBA : ABBA :: CC : DEED]


★ 2.
• {Wet Behind The Ears/Kevin McKinney}


"Astronomers Find Water On The Moon!"  A
And here you thought we'd wasted time and cash   B
Going all that way to bring back rocks and ash;    B
This late reprieve may prove to be a boon...  A
For poets, and could not have come too soon;   A
Those barren seas had always been awash;   B
Tranquility, the perfect place to splash;   B
But science had deflated that balloon!   A


So now, as academics jump for joy,   C
A moonchild giggles at her bath tub toy;   C
Her mom tells dad he'd better cut the lawn   D
'Cause forecasts call for meteor showers.   E
This morning, on Earth, some time after dawn,   D
The Moon hung out with the Sun, for hours.   E


[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABBA : ABBA :: CC : DEDE]


#বাংলা সাহিত্যে ফরাসি সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাঃ-


বাংলা সাহিত্যে ফরাসি সনেটের চর্চা শুরু অনুবাদের মাধ্যমে।
ফরাসি কবি Jose-Maria Heredia (১৮৪২-১৯০৫) রচিত 'বিস্মৃতি' ও 'অকালমৃতা' নামক দুটি সনেটের অনুবাদ করেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যার ছন্দোবন্ধ নিম্নরূপ : কখখক : কখখক :: গগঘ : ঙঘঙ।


বাংলা ভাষায় সনেটের আদি যুগের কবিদের মধ্যে বিষ্ণু দে এবং আশুতোষ ভট্টাচার্যই খাঁটি ফরাসি রীতিতে সনেট রচনা করেছেন। বিষ্ণু দের "উর্বশী ও আর্টেমিস" কাব্যগ্রন্থের 'কাব্যপ্রেম' ও "সন্দীপের চর" কাব্যগ্রন্থের 'শালবন' কাব্য দুটি ফরাসি রীতিতে রচিত। এরপর আশুতোষ ভট্টাচার্যের 'টগর' নামক শীর্ষক সনেটটি ফরাসি রীতি অনুসরণ করে।


প্রমথ চৌধুরী এ রীতিতে বৈচিত্র আনেন। তিনি ভগ্ন ফরাসি রীতিতে সনেট রচনা করেছেন।
ফরাসি রীতি ভেঙে প্রমথ চৌধুরী নিম্নের নতুন রূপকল্পের প্রবর্তন করেনঃ
কখখক : কখখক :: গগ : ঘঙঙঘ,
কখখক : কখখক :: গগ :ঘঙঘঙ।
প্রমথ চৌধুরীর ফরাসী-ঘেঁষা আদর্শের অনুসরণে কান্তিচন্দ্র ঘোষ, রিয়াজউদ্দীন চৌধুরী ও রাধারাণী দেবী বহু সনেট নির্মাণ করেছেন। এভাবে ত্রিধা-বিভক্ত হতে গিয়ে অনেক সনেট একেবারে যথেচ্চাচারের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। নিচে এরূপ অনিয়মিত ধাঁচের রূপকল্প দেখুনঃ প্রমথ চৌধুরীর 'ও' শীর্ষক সনেট- কখখক : গঘঘগ :: ঙঙ : চছচছ রিয়াজউদ্দীন চৌধুরীর 'শাহজাহান (২)- কখখক : গঘঘগ :: ঙঙ : চছচছ প্রিয়নাথ সেনের 'অব্যক্ত বাসনা'- কখকখ : গঘগঘ :: ঙঙ : চছছচ রাধারাণী দেবীর 'বিগত অতীত'- কখকখ : গঘগঘ :: ঙঙ : চছচছ রবীন্দ্রনাথের 'বাহু'- কখখক : কগকগ :: ঘঙঘঙ : চচ যতীন্দ্রমোহন বাগচীর 'বিপন্না'- কখকখ : খকখক :: গগ : ঘঙঘঙ সুকান্ত ভট্টচার্যের 'অলক্ষ্যে'- কখখক : কগগক :: ঘঘঙ : চঙচ সানাউল হকের 'সম্ভবা অনন্যা' কাব্যের ৩৮ পৃষ্ঠার সনেট- কখ খক : গঘ গঘ :: ঙচ ঙচ ঙচ শামসুর রাহমানের 'স্টেজে' ও 'একজন বেকারের উক্তি'- কখ খক : গঘঘগ :: ঙচছ ঙচছ আল মাহমুদের 'লোকান্তর' ও 'আমি'- কখ খক : গঘঘগ :: ঙচচ ঙচঙ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের 'সাতাশে এপ্রিল'- কখ খক : গঘ ঘগ :: ঙচছ চছঙ বাংলা ভাষায় অনিয়মিত ধাঁচে অনেক সনেট রচিত হয়েছে; তন্মধ্যে দেবেন্দ্রনাথ সেনের প্রবর্তিত দুটি পদ্ধতি উল্লেখনীয়।


ফরাসি সনেটে পেত্রার্কীয় বা শেক্সপীয়রীয় রীতির মতো ব্যাকরণের তেমন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই বলে এ সনেটের দিকেই বর্তমান কালের কবিরা একটু বেশিই ঝুঁকছেন।


#বাংলা সাহিত্যে ফরাসি সনেট/চতুর্দশপদী কবিতার উদাহরণঃ-


★১.
১৪ মাত্রার ফরাসি রীতির সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাঃ


• প্রথম চৌধুরীর ১৪ মাত্রায় লেখা 'অন্বেষণ' কবিতাটি উল্লেখ করা হলোঃ
আজিও জানিনে আমি | হেথায় কি চাই!  ক
কখনো রূপেতে খুঁজি | নয়ন উৎসব,   খ
পিপাসা মিটাতে চাই | ফুলের আসব,   খ
কভু বসি যোগাসনে, | অঙ্গে মেখে ছাই॥   ক


কখনো বিজ্ঞানে করি | প্রকৃতি যাচাই,   ক
খুঁজি তারে যার গর্ভে | জগৎ প্রসব,   খ
পূজা করি নির্ব্বিচারে | শিব কি কেশব,—  খ
আজিও জানিনে আমি | তাহে কিবা পাই॥  ক


রূপের মাঝারে চাহি | অরূপ দর্শন।   গ
অঙ্গের মাঝারে মাগি | অনঙ্গস্পর্শন॥  গ


খোঁজা জানি নষ্ট করা | সময় বৃথায়,—  ঘ
দূর তবে কাছে আসে, | কাছে যবে দূর।   ঙ
বিশ্রাম পায় না মন | পরের কথায়,   ঘ
অবিশ্রান্ত খুঁজি তাই | অনাহত-সুর॥   ঙ


(অন্বেষণ/প্রমথ চৌধুরী)
{অন্ত্যমিলঃ কখখক : কখখক :: গগ : ঘঙঘঙ}
[পর্ব বিন্যাসঃ ৮+৬; স্তবক বিন্যাসঃ ৪+৪+২+৪]


★২.
১৮ মাত্রার ফরাসি রীতির সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাঃ


• নিচে বিষ্ণু দের ১৮ মাত্রায় লেখা 'কাব্যপ্রেম' সনেটটি উল্লেখ করা হলোঃ


তোমাকেই ঘিরে চলে | রক্তস্রোত আমার মন্থর,  ক
চিত্ত হল পথহারা | স্বপ্নের নিবিড় কুয়াশায়।  খ
জীবনের ছন্দ ভেঙে | তোমার কেশের গন্ধ হায়  খ
সর্পিল গতিতে টানে | অহর্নিশি আমার অন্তর।  ক


তোমাকেই আঁকে স্নায়ু | পাকে পাকে দেহের ভিতর,  ক
তোমারই অস্তিত্ব সৌর|কেদ্র যে আমার চেতনায়।  খ
আমার প্রত্যাশা, প্রেম | রাখো তুমি আমার আশায়-  খ
পুরুষ আমার চিত্ত | নিত্য হেরে স্বপ্নস্বয়ম্বর।  ক


তোমার সুঠাম দেহ, | গোধূমি-রঙিন তনুখানি  গ
যে মায়া বিছায় মনে, | জানি আমি সেই মায়া জানি-  গ


চিত্রকর ভাস্করের | স্বপ্নমূর্তি আমি হেরিলাম  ঘ
তোমার দেহের মাঝে। | কবিতার হোলিতে রঙীন  ঙ
আমার মনের বেশ- | আবীরে মাতাল রাত্রি দিন।  ঘ
তোমারই প্রতিমা দেখি | নগরীর পটে অবিশ্রাম।  ঙ


(কাব্যপ্রেম/বিষ্ণু দে)
{কখখক : কখখক :: গগ : ঘঙঙঘ}
[পর্ব বিন্যাসঃ ৮+১০; স্তবক বিন্যাসঃ ৪+৪+২+৪]


    -----★★-----


▪ মিলটনিক (Miltonic Sonnet) সনেটঃ-


ইংরেজ কবি জন মিলটনের (১৬০৮-১৬৭৪) সনেটের ধারাকে 'মিলটনিক সনেট' বলা হয়। এটি আসলে পেত্রার্কীয় পন্থী একটি ধারা।
বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের একজন হলেন কবি জন মিলটন।
মানুষ তার জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কীভাবে অমর হতে পারেন, তার প্রমাণ তিনি। কারণ মিলটন যখন তার কালজয়ী মহাকাব্য ‘প্যারাডাইস লস্ট’ রচনা করেন তখন তিনি ছিলেন অন্ধ! অনেকেই ইংরেজি সাহিত্যে শেক্সপিয়ারের পরেই জন মিলটন কে স্থান দিয়ে থাকেন। তার কালজয়ী মহাকাব্য Paradise Lost-এর জন্য তিনি অমর হয়ে আছেন। স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি ল্যাটিন, গ্রিক, হিব্রু ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। সাথে সাথে চলতে থাকে কবিতা লেখার কাজ। তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৬২৬ সালে।


যথার্থ ক্লাসিকাল রীতির সনেট রচনা করে তিনি ইংরেজি সনেটের নবমুল্য রচনা করেন।
জন মিলটন ২৪ টির মতো সনেট রচনা করেছেন। সনেট রচনায় মিল্টন পেত্রার্কীয় ধারারই অনুসারী যদিও মিল্টনের পূর্বে অনেক সনেট রচয়িতা শেক্সপিয়রীয় ধারার অনুসরণ করেন। মিল্টন পেত্রার্কীয় ধারা অবিকল অনুকরণ করেননি অবশ্য। মিল্টন সনেটকে "প্রেমের কবিতা" বিভাগ থেকে বের করে এনে রাজনীতি এবং সামাজিক সমস্যার জগতে নিয়ে এসেছিল।


সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ফিলিপ অ্যাডার্স (১৬৩৮-১৭১২) মিলটনীয় সনেট অনুকরণে কয়েকটি সনেট রচনা করেছেন।
এছাড়াও টমাস এডওয়ার্ড (১৬৯৯-১৭৫৭) এবং টমাস ওয়ার্টসন (১৭২৮-১৭৯০) মিলটনীয় রীতি অনুসরণে বেশ কয়েকটি সনেট রচনা করেছেন।


#মিলটনিক সনেটের বৈশিষ্ট্যঃ-


★ মিলটনিক সনেট পেত্রার্কীয় সনেটের মতোই একটি অষ্টক ও একটি ষটক নিয়ে গঠিত। এ সনেটের অষ্টকটি দুটি সংবৃত চতুষ্কে গঠিত।
অষ্টকের মিলবিন্যাসঃ
ABBA ABBA/কখখক কখখক


★ এ সনেটের ষটকের মিলবিন্যাসে বৈচিত্র্য রয়েছে। মিলটনের সনেটের ষটকে আট প্রকার মিলবিন্যাস লক্ষ্য করা যায়। যথাঃ
১) CDE CDE/গঘঙ গঘঙ
২) CDE DCE/গঘঙ ঘগঙ
৩) CDC/DCD/গঘগ ঘগঘ
৪) CDD CDC/গঘঘ গঘগ
৫) CDC EED/গঘগ ঙঙঘ
৬) CDD CEE/গঘঘ গঙঙ
৭) CDC DEE/গঘগ ঘঙঙ
৮) CDE DEC/গঘঙ ঘঙগ


★ পেত্রার্কীয় বা ইতালিয় সনেট পরিষ্কারভাবে octave (অষ্টক) ও sestet (ষটকে) বিভক্ত, অষ্টকে যে ভাবের অবতারণা করা হয় তা অষ্টকেই শেষ হয়ে যায়, ষটকে সে ভাবের উপসংহার টানা হয় অর্থাৎ অষ্টক ও ষটকের ছন্দ বিন্যাস থাকে ভিন্ন রকম। কিন্তু মিল্টন তার অষ্টক ও ষটককে এমনভাবে সুস্পষ্ট না করে বরং দুটি ভাগকে একত্রিত করেছেন। অষ্টকের ভাব প্রবাহ ষটক পর্যন্ত গড়িয়েছে মিল্টনের সনেটে।


• উদাহরণস্বরূপ-
Doth god exact day-labour, light denied
I fondly ask; but patience to prevent
That murmur, soon replies, God doth not need
“prevent” শব্দটি দিয়েই অষ্টক শেষ হয় কিন্তু বাক্য বিন্যাস শেষ হয় না, ষটকে গিয়ে বাক্য শেষ হয়। পেত্রার্কীয় সনেটে অষ্টকেই বাক্য শেষ হয়ে যায়। মিল্টনের সনেট সাধারণত প্রচলিত iambic pentameter ধারারই অনুসারী। যদিও কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমনঃ
And that/one tal/ ent which/ is death/ to hide
Lodged with/ me use / less though / my soul / more lent.
এই উদাহরণটিতে প্রথম পক্তিটি iambic pentamenter কিন্তু দ্বিতীয় পংক্তির প্রথম syllable-টি একটি trochee, পরবর্তীগুলো আবার এক একটি ‘iamb’।


পেত্রার্কীয় সনেটের সঙ্গে মিল্টনের সনেটের এরকম কিছু পার্থক্য লক্ষণীয়। মিল্টনের সনেটটির অলঙ্করণ পদ্ধতি কবিতাকে বর্ণনায়, ব্যাঞ্জনায় সমুজ্জ্বল করে তোলে। মানুষের নৈতিকতাকে তিনি ব্যক্তিত্বারোপ করেন (personify) করেন, যেমন, ধৈর্য তাকে যে প্রশ্ন করে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তার উত্তর দেন। কবি অত্যন্ত দক্ষতায় শব্দ ও শব্দগুচ্ছ চয়ন করেন—“dark world and wide, “death to hide”, “chide”,“post over”, “stand and wait” সনেটটির ভাব প্রকাশকে বেগবান করে তোলে।


#মিলটমিক রীতির সনেটের উদাহরণঃ-
★ ১.
•Miltonic Sonnet No 19:
["When I consider how my light is spent"} /John Milton]


When I consider how my light is spent
Ere half my days in this dark world and wide,
And that one talent which is death to hide
Lodg'd with me useless, though my soul more bent
To serve therewith my Maker, and present
My true account, lest he returning chide;
"Doth God exact day-labour, light denied?"
I fondly ask. But Patience to prevent
{Octave}


That murmur, soon replies: "God doth not need
Either man's work or his own gifts; who best
Bear his mild yoke, they serve him best. His state
Is kingly. Thousands at his bidding speed
And post o'er land and ocean without rest:
They also serve who only stand and wait."
{Sestet}
[অন্ত্যমিলঃ ABBA ABBA CDECDE]


★ ২.
•Miltonic Sonnet No 7:
[(On His Being Arrived to the Age of Twenty-Three”)  /John Milton]


How soon hath Time, the subtle thief of youth,
Stolen on his wing my three and twentieth year!
My hasting days fly on with full career,
But my late spring no bud or blossom shew’th.
Perhaps my semblance might deceive the truth,
That I to manhood am arrived so near,
And inward ripeness doth much less appear,
That some more timely-happy spirits indu’th.
{Octabe}


Yet be it less or more, or soon or slow,  C
It shall be still in strictest measure even  D
To that same lot, however mean or high,  E
Toward which time leads me, and the will of heaven,  D
All is, if I have grace to use it so,  C
As ever in my great Task-master’s eye. E
{Sestet}
[অন্ত্যমিলঃ ABBA ABBA CDEDCE]


#বাংলা সাহিত্যে মিলটনিক সনেটঃ-


বাংলা সাহিত্যে মিলটনিক সনেটের তেমন বিস্তার লাভ না করলেও বিভিন্ন কবির বহু সনেট কবিতায় এ ধারার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বাংলা সাহিত্যে সনেটের জনক মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'মহাভারত' ও 'সংস্কৃত' কবিতায় মিলটনীয় ধারা লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়াও তার উপক্রম-১, পরিচয়-১, সরস্বতী, কল্পনা, সতেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বীররস, কুসুমে কীট, মধুকর, শিশুপাল, সীতাবনবাসে-২, সহ সর্বমোট ৩৬ টি কবিতা ভঙ্গ মিলটনীয় রীতিতে রচিত এবং আরো ৩ টি কবিতা শিথিল মিলটনীয় রীতিতে রচিত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বন্দী', 'মুক্তি', 'মায়াবাদ', 'তনু', 'আত্মসমর্পণ' এই পাঁচটি সনেট ভঙ্গ মিলটনীয় রীতিতে রচিত ধরা যায়। তার আরো চারটি সনেটকে শিথিল মিলটনীয় সনেট ধরা যায়।


#বাংলা সাহিত্যে মিলটনীয় সনেট/চতুর্দশপদী কবিতার উদাহরণঃ-


★ ১.
কল্পনা-বাহনে সুখে | করি আরোহণ,  ক
উতরিনু, যথা বসি | বদরীর তলে,  খ
করে বীণা, গাইছেন | গীত কুতূহলে  খ
সত্যবতী-সুত কবি,— | ঋষিকুল-ধন!  ক
শুনিলু গম্ভীর ধ্বনি; | উম্মীলি নয়ন   ক
দেখিনু কৌরবেশ্বরে, | মত্ত বাহুবলে;   খ
দেখিনু পবন-পুত্রে, | ঝড় যথা চলে   খ
হুঙ্কারে! আইলা কর্ণ— | সূর্যের নন্দন—  ক
তেজস্বী। উজ্জ্বলি যথা | ছোটে অনম্বরে  গ
নক্ষত্র, আইলা ক্ষেত্রে | পার্থ মহামতি,  ঘ
আলো করি দশ দিশ, | ধরি বাম করে  গ
গাণ্ডীব—প্রচণ্ড-দণ্ড | দাতা রিপু প্রতি।  ঘ
তরাসে আকুল হৈনু | এ কাল সমরে  গ
দ্বাপরে গোগৃহ-রণে | উত্তর যেমতি।   ঘ


(মহাভারত/মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
[অন্ত্যমিলঃ কখখক কখখক গঘগ ঘগঘ]


★ ২.
কাণ্ডারী-বিহীন তরি | যথা সিন্ধু-জলে  ক
সহি বহু দিন ঝড়, | তরঙ্গ-পীড়নে,  খ
লভে কূল কালে, মন্দ | পবন-চালনে;  খ
সে সুদশা আজি তব | সুভাগ্যের বলে,  ক
সংস্কৃত, দেব-ভাষা | মানব-মণ্ডলে,  ক
সাগর-কল্লোল-ধ্বনি, | নদের বদনে,  খ
বজ্রনাদ, কম্পবান | বীণা-তার-গণে!  খ
রাজাশ্রম আজি তব! | উদয়-অচলে,  ক
কনক-উদয়াচলে, | আবার, সুন্দরি,   গ
বিক্রম-অাদিত্যে | তুমি হের লো হরষে,  ঘ
নব আদিত্যের রূপে! | পুৰ্ব্বে-রূপ ধরি,  গ
ফোট পুনঃ পুর্ব্বরূপে, | পুনঃ পূৰ্ব্ব-রসে  ঘ
এত দিনে প্রভাতিল | দুখ-বিভাবরী;  গ
ফোট মনানন্দে হাসি | মনের সরসে।  ঘ


(সংস্কৃত/মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
[অন্ত্যমিলঃ কখখক কখখক |গঘগ ঘগঘ]


-----------★★★------------


→চলবে...