তুমিই প্রথম, ভাবতে শেখালে বলেই-‘ভেবেছি’,
হৃদয় প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধাঞ্জলীর প্রদীপগুলো জ্বালিয়ে
যজ্ঞসাধনে পেয়েছি পথের সন্ধান- আপন বন্ধনের শৃঙ্খল।
আত্মদৃশ্যে ভাবতে শেখা অ-আ অক্ষরমালার মুগ্ধতায়,
মৌবনের মধু বুনেছি আর অপাজিতা বিদ্রোহী
হয়ে চক্ষুখরা হিংসুটের পতনে শক্তি সঞ্চার করি
অপরূপ মায়ার মাতৃদানের কৃতজ্ঞতায়....।
এতো তোমারি অবদান- ‘হে আমার প্রিয় স্বাধীনতা’।


তুমি ভাবতে শেখালে বলে-
ষড়ঋতুর বিচিত্র রূপের নিপূণ কৌশলে ফুটতে দেখেছি
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকাগুলি আন্দোলিত করে বিশ্বক্ষতি নেশায়
উন্মাদ হয়ে কুরে কুরে খাচ্ছে-আমার মায়ের রেখে যাওয়া অবশিষ্টকে...।
কখনও বা চৈত্রের খরতাপে প্রজ্বলিত হয়ে
ফেটে কম্পন জাগাও স্বপ্নভূমির মিনারে.।
তবুও অত্যাচারি জালিমের ঘাম ঝরা উত্তেজনাকে
ক্রমেই বাড়িয়ে হতাশা কর, বাধাগ্রস্ত হয়-নসাৎ করা পরিকল্পনা
এ যেন- শকুনের ঠোঁটের রক্ত দিয়ে তারে রাঙ্গিয়ে দেওয়া-
ইতিহাসের বীরত্বগাথা- ‘তুমি বীরের জাতি’।


তুমি ভাবতে শেখালে বলে- ‘ভেবেছি’
স্বপ্ন ভূমির মাতৃস্নেহে, জলের গভীরে জমে থাকে ধান  
আর চিটারা সব ভেসে চলে, পরগাছারূপী- আত্মহীন অস্তিত্ব নিয়ে।
পথভোলা মনুষ্যত্বের ছায়াতলে- তাদের পুঁজিরে আখেরী সঞ্চয় ভেবে
‘নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারে’-হয়ে ওঠে বিপদগ্রস্ত মৃত্যুপথযাত্রী..।
চক্ষুখরা দানবরে শায়েস্তা করতে- গর্জে ওঠে রেসর্কোস ময়দানের জনতা,
ভীড় জমায় সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারের নাম না জানা বাঙালী
স্বাধীন বাংলার স্বাধীন পতাকা.. হে আমার প্রিয় স্বাধীনতা।  



জনতার ঢলে আন্দোলিত করে আমার প্রাণের অলিগলি,
ছুটে চলে মুক্তির নেশায়, বিবেকের এপাড়-ওপাড়।
ভাবতে শেখায়- নিঃস্ব মুক্তিকামী স্মৃতিকন্ঠের হা-হা প্রতিধ্বনি,
হিংস্র জানোয়ারের থাবা বুঝতে পারে অনুভূতির নিক্তিতে...
কল্পনার জগতের স্থান করে নেয় বীরত্ব গাঁতা মুক্তিযোদ্ধার মহান ইতিহাস
অনুপ্রেরণা যোগায় নবগঠনের জীবনিশক্তিতে......।


যদিও স্মৃতি পাতায় শোকের কালিমা, তবুও বেঁচে থাকার আত্মচিৎকার
আদরের সন্তানরে চুম্বনে-সোহাগের দু’হাত বাড়িয়ে ডাকে-
বেঁচে থাকা সন্তানের মুক্তির সাত্ত্বনায়....।
যে খাঁচার পাখি আজ উড়তে শিখেছে,
নিজের ভাষায় মুক্ত কন্ঠে গেয়ে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছে
মাথা উচু করে বাঁচতে শিখেছি,
আপন অামিত্বকে প্রধান্য দিয়ে সমবন্টনে উৎসাহী হতে
তাঁর আবার চিন্তা কিসের..এই তো আমার প্রিয় স্বাধীনতা
যে আমায় সুচারুরূপে সব ক্ষেত্রে ভাবতে শেখালো...........।