অনেক বছর পর আমি আবার আসছি, জানি তুমি থাকবে না সেখানে দাঁড়িয়ে, তবু আসছি, বরফে জমে যাওয়া নদীর ধারে সেই বিশাল পাথরটার কাছে, গভীর রাতে, ঠিক রাত বারোটায়, তুষার ঝড়ের ভেতর! তোমার জন্মদিনে আমি না এসে পারি এখানটাতে?


এই তুষারের শেষ নেই, সারা রাত শব্দহীন প্রেম ঝরো ঝরো
চন্দ্রালোকে আদিগন্ত একাকি নির্জন হাইওয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিত হয়ে বেআবরু শুয়ে আছে
এই ধব ধবে শাদা তুষারের সাথে প্রেম হচ্ছে তার! এই প্রেমে কে প্রেমিক, কে প্রেমিকা সেটা বোঝা দায়!
এদিকে পাতাহীন ওক বন আর ক’টা চিত্রল হরিণ নিজেদের লীলা ভুলে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমার গাড়ির দিকে।
ওদের চোখে হেডলাইট!


আমার গাড়ির টায়ার “গাড়লের মতো” ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেয় এই প্রেম!
ওদিকে তুমুল ঝড় বৃষ্টি, ডেলটা ফ্লাইট টা পথ ভুলে অন্য দিকে চলে গেলো! স্যরি আমার কোনো দোষ নেই। দু ঘণ্টা লেট!
উইন্ডশিল্ড ওয়াইপারে ভেজা তুষার গলে গলে যায় --- ওয়াইপার স্লিপ স্লিপ, স্লিপ স্লিপ স্লিপ !


মনেহলো একদিন এই সময়টাতে আপেক্ষার তুমি!
কালো ওভারকোট পরে!
সেই রাতে তোমার ওভেরকোট খুলে আমি দেখিনি কি সেই সাম্রাজ্য,
আমিতো তখন তোমার চুলের রাশিতে তুষার কণার সমর্পণ দেখছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে !
দ্যাখো দেখি কেমন তুষারে তুমি সর্বস্ব ঢেকে আছো
তোমার ঊলের টুপি, চুল, কানের ঝুমকো চোখের পাতা থেকে টোকা দিয়ে তুষারের আহ্ললাদ ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিলাম!


তুমি বললে “থাক্ না, ওরা না হয় আমার সঙ্গে আজ রাতে আকাশের নিচে প্রেম করুক!
তুমিতো যথারীতি দু ঘন্টা লেট, তাছাড়া বড্ড শীত, কোট খোলা যাবেনা!”


অনেকগুলো বছর পর --- বলছি তোমাকে আমি "শুভ জন্মদিন"
ওয়াইপার স্লিপ স্লিপ, স্লিপ স্লিপ তুষার সরায়,
খোঁজে কালো ওভারকোট, শুধু ওভারকোট
বোস স্পিকারে সি ডি বলে,
"সখী, ভালোবাসা কারে কয় সে কি --- --- "
=====================


"আমি এই কবিতাটা আমাদের একজন প্রিয় এবং শ্রদ্ধেয় কবি বন্ধু নীল দহন (সীমন্ত মৈত্র ) কে উৎসর্গ করলাম। আমি এই আসরে একমাস হল এসেছি, এই একটা মাসে উনি আমাকে নিবিড় করে অনেক অনুপ্রাণিত করেছেন। আমার কাছে উনি একজন বিস্ময়কর কবি, সেটা যে কোনো পাঠক ওনার কবিতা  পড়লেই বিশ্বাস করবেন (আমার ধারণা)। আমি  ওনার নতুন একটা কবিতা "চন্দ্রগ্রহণ” পড়ে খুব মুগ্ধ হয়েছি।