কান পেতে আমি শুনি শিশিরের শব্দ,
জাম বন নির্জন
স্তদ্ধ
আমার হাতের পাতায়
বিষণ্ণ বেহাগ বদ্ধ সব মৃত কবিতার দল
শতেক পাঁপড়ি মেলে শুয়ে থাকে
জলঙ্গি নদীর জলে গলিত হিজল
মালঞ্চ মালা হয়ে ! ওরা
চন্দ্রালোক ভেজা জল
নিঃশব্দের শব্দ দল ছল ছল অশ্রু ভেজায়।


"পীনোন্নত নীলকাঞ্চন" আর বেগুনী রডোডেনড্রন
হিমালয় শিখরে তুষারে তোলে মৃদু কম্পন
বন উপবনে
বেগানা সব আওরত শিশিরের শব্দে ভিজে; নীল নীল জহরত
কন্ঠে তাঁদের --- শারমিন কুয়াশা ছড়ায়।


আমার প্রেয়সী সে এক রাশি শিশির-শব্দ নিয়ে
ফিরে আসে ধীর পায়ে আঁচলে কুয়াশা দিয়ে
সে উইলোর চিরল পাতার বনে আলপনা দিতে গিয়ে
অশ্রুতে এঁকে দেয় আমার পৃথিবী!


তারপর
বিল্মবিত লয়ে সেতারের তার ছিঁড়ে দিয়ে
সে ফিরে চলে যায় কায়াহীন ছায়া হয়ে
মধ্যযাম মালকোশ সীমানা পেড়িয়ে।


আমি কান পেতে থাকি, যদি শুনি
নিবিড় ঘন গহনে তাঁর কুয়াশা ভেজা
ব্যথিত জামার গান --- শিশিরের শব্দ !
শি শি রে র -- শি শি রে র -- শি শি রে – শিশির ভরা
তাঁর বুকের ভেতর
সেই নিঃশব্দের শব্দ !
------------------
("পীনোন্নত নীলকাঞ্চন" শব্দটা আমি পেয়েছি আমাদের এই আসরের বরেণ্য কবি আনোয়ার পারভেজ শিশিরের “সর্বনাশের সিম্ফোনি” কবিতা থেকে; বস্তুত আমার এই কবিতার শিরোনামটাও ওনার নাম থেকে ধার করা হয়েছে)