** এই কবিতাটির উৎসঃ "কবিতা নয়, যুক্তাক্ষর" (কবির নাম "ভন্ড"), এই self-claimed ভন্ড কবি এই আসরে হয়তো অন্য কোনো নামে কবিতা লেখেন, কিংবা লেখেন না। ওনার প্রতি রইলো আমার অনেক শ্রদ্ধাঞ্জলি আর ভালবাসা!।
========================


সপ্তায় দু একটা দিন, সূর্য যখন পশ্চিমে হেলে আছে,
নিবিড় বিকেলে, ছল ছল জল লেকের জলে শাড়ির
পাড় ভিজিয়ে সে বসে আছে, মৃদু হেসে, বলে "সেমিনারে না গেলে
কী এমনটা মহাভারত অশুদ্ধ হয়? কতক্ষণ একা আমি বসে আছি?
আজ আর বিষ্ণু দে পড়া হবেনা, যেতে হবে ল্যান্ডফোনে টেলিফোন
আসবে, সিকাগো, ওন্টারিও, ডালাস নাকি ইউরোপ থেকে জানা নেই
জানার ইচ্ছেও নেই, না পেলে বিরক্তি, চলো মিনিট দশেক বসি,
দেখি কি লিখেছো আজ আঙ্কিক ক্লাসে বসে?"


দশ বিশ মিনিট চক্ষে দেখে, কাছে বসে কাছ থেকে
পুস্পময় সে নিঃশ্বাস, অণু, পরমাণুর অদৃশ্য বিচ্ছুরণ
তাঁর শরীর এক আকাশ বাতাস অনুরাগ পূর্বরাগের
মিহি স্রোতে গলিত রেণুর রং, বহুদিন আগে দেখা
বৃষ্টি ভেজা জাম পাতার অন্ধকারে টিপ টিপ জোনাকি পিদিম
অবিরাম জ্বলে নেভে, জ্বলে নেভে
পাতায় পাতায় তৃষ্ণা, জনান্তিকে ফিস ফিস, বলে "কাছে এসো, কাছে এসো
যতো কাছে পারো ততো কাছে এসো, এই দ্যাখো
আমি আমার নিভৃতে অপেক্ষার বাঁধ ভেঙে বসে আছি,
বুক ভরে নিঃশ্বাস নাও "-- সেই দশ থেকে বিশটা মিনিট।


স্রেফ দশ বিশটা মিনিট সপ্তায় দু একটা দিন
দূর থেকে দেখা মাত্র সমস্ত পৃথিবীটা রূপকথা হয়ে যায়
বুকের ভেতর "নামহীন এক্সপ্রেস" শতেক মাইল বেগে
মায়ামি থেকে স্যান্ডিয়েগো ধেয়ে যায় ধরণী কাঁপিয়ে। আমি দেখি
তাঁর চুল উড়ে উড়ে উইলোর চিরল পাতা ছুঁয়ে দিতে চায়!
তাঁর চোখ লেকের স্বচ্ছ জলের তলায় মৎস্য রাজকন্যা আয়না সম জলছবি সত্যবতী ,
যার মীনাক্ষীতে এক মুহূর্তে ভেঙে ভেঙে জন্ম থেকে মৃত্যু দেখা যায় !


সেই সব "দশ বিশটা মিনিট" পরে লক্ষ মিনিট হয়ে অন্ধকারে শঙ্খ করাত
রক্ত ক্ষরণ সারাটা দিন সারাটা রাত
প্রাণের ভেতর শব্দহীন চীৎকার, একটা দিন না দেখেই
"কতদিন কতদিন দেখিনি তোমায়"
আমি এখন কোথায় যাবো? কোন সেই দূরত্বে? যেখানে সে নেই?
এ কথা আমি কেমন করে তাঁকে বলবো, মুক্ত ছিলাম, হলাম কি ক্রীতদাস?