হৃদয় আমার ছাঁকনির মতো ছিদ্র হয়ে গেলো
কালো মেঘে মেঘে ঢেকে গেলো আকাশ
ঘন অন্ধকার পৃথিবীকে বেষ্টন করে
আকাশ বিজয়ী হলো পৃথিবীর উপর
কালের গহ্বরে তাই বুঝি হারিয়ে গেলে
অথচ যেখানেই যাই না কেনো  
তোমার চোখ দুটি অবিরত পলক ফেলে
রাত্রির আকাশে মিটমিট নক্ষত্রের মতো
প্রভাতের প্রথম আলোতে যা অদৃশ্য হয়ে যায়


অন্তর আমার এফোঁড় ওফোঁড় হয়
তোমার শান্ত চোখে ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুপাত
অক্ষিপক্ষ্মর ফোঁটাগুলো স্বচ্ছ ডুমুরের থোকা হয়ে যায়
কোন এক শীতের সকালে যা শিশির দিয়ে ধুয়ে দেয়া
নিভৃত গহীনের কষ্টগুলো ভারী বাষ্প হয়ে
বড় বড় চিমনির ভিতর দিয়ে আকাশে উড়ে যায়
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে, কেবলই ঝরে পড়ে
শোকের ছায়া পড়ে বাগিচা, বৃক্ষ এবং পথের উপর
সবখানে ছড়িয়ে পড়ে শোক ও জ্বলনের মিশ্রণ


আমি তোমার মধ্যে অন্ধকারের চিৎকার শুনতে পাই
বিষণ্ণ ধ্বংসাবশেষে নিঃসঙ্গ ঘুমিয়ে আছো তুমি
আর নীরবতায় শুনতে পেলাম
নিয়তির দুয়ারে কড়া নাড়ার শব্দ
প্রতিটি টোকাতে পাঁজর কেঁপে ওঠে, চোখ দুটি অশ্রুতে স্নান করে
মুসাফির নিমেষেই চলে গেলো, দূরে - অনেক দূরে
আমার মুখ ও অন্তরে বিষাদের আকস্মিক চুম্বন
যেনো গহীন অরণ্যে পথ হারানো পথিক
ঝড়-ঝঞ্ঝাতে বিধ্বস্ত - পরিত্যক্ত পাখির বাসার মতো
দুঃখের সেতারার সুর আমার গাল ও কপালকে আলিঙ্গন করে
এক মুসাফির কালের গহ্বরে হারিয়ে গেলো চিরতরে


দুই হাতে মুষ্টির মাটিতে বিদায়ের শেষ নিবেদন
‘আল্লাহুম্মাগফির-লাহু ওয়া ছাব্বাতহু’


শোন মুসাফির ! আমার প্রশ্বাসে তোমার অপেক্ষার চিত্রপট
আমার হৃৎপিণ্ডের শ্বাস তোমার হাত আরেকবার স্পর্শ করতে চায়
ওহ ! যদি জানতাম ! এটা কি এখনো সম্ভব ?
ওহ ! যদি জানতাম ! তুমি কি এটাতে রাজি ?
ওহ ! যদি জানতাম ! তুমিও কি এটা চাও ?
তোমার হাত ও মুখ একটুখানি ছুঁয়ে দিতে চাই
গহ্বরের পতন হতেও কি তা আরও একবার সম্ভব ?
আতর ও গোলাপের সৌরভেও কি
তুমি আরো একবার নড়ে উঠবে না ?
আমাকে দেখতে দাও ! আমাকে দেখতে দাও !


ফিরোজ, দিলকুশা, ১৪/০৯/২০২০